You dont have javascript enabled! Please enable it! 1952.11.16 | পশ্চিম পাকিস্তানের স্কুলে বাংলা অবশ্য পাঠ্য করার প্রস্তাব - সংগ্রামের নোটবুক

পশ্চিম পাকিস্তানের স্কুলে বাংলা অবশ্য পাঠ্য করার প্রস্তাব

লায়ালপুর ৮ই নভেম্বর পাঞ্জাব মােছলেম লীগ সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি চৌধুরী আজিজুদ্দিন এম. এল. এ. তাঁহার অভিভাষণে পূর্ব পাকিস্তানের স্কুলসমূহে উর্দুকে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের স্কুলসমূহে বাংলাকে অবশ্য পাঠ্য করার প্রস্তাব করেন।
গতকল্য পাঞ্জাব মােছলেম লীগ সম্মেলনের সান্ধ্য অধিবেশনে সীমান্তের প্রধানমন্ত্রী খান আবদুল কাইয়ুম খান সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলনের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি চৌধুরী আজিজুদ্দীন এম, এল, এ তাহার অভিভাষণ পাঠ করেন। এই অভিভাষণে তিনি পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে গভীর ঐক্য সৃষ্টির উল্লেখ করেন।
পূর্ব পাকিস্তানের স্কুলসমূহে উর্দুকে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের স্কুলসমূহে বাংলাকে অবশ্য শিক্ষণীয় বিষয় হিসাবে পাঠ্য তালিকাভুক্ত করার জন্য তিনি আবেদন জানান।
তিনি বলেন এই পন্থা অবলম্বনের ফলে এমন অবস্থার উদ্ভব হইবে যখন ভাষার প্রশ্নই , আর থাকিবে না। চৌধুরী আজিজুদ্দীন আরও বলেন যে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে সমগ্র পাকিস্তানীদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির প্রয়ােজনীয়তার উপরে বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করিয়া তিনি বলেন, এজন্য দুই পাকিস্তানের মধ্যে যােগাযােগ ব্যবস্থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত করা প্রয়ােজন।
এতদ্ব্যতীত অত্যন্ত কার্যকর ভ্রমণ ব্যবস্থাকেও সহজতর এবং ত্বরান্বিত করিয়া তােলা দরকার।
শুভেচ্ছা মিশন প্রেরণের সােপারেশ
তিনি আরও বলেন, উভয় অংশের শিক্ষক, সরকারী চাকুরিয়া, ছাত্র, ব্যবসায়ী ও দেশকর্মীকে লইয়া গঠিত যথেষ্ট শুভেচ্ছা মিশন প্রেরণ করা উচিত। ইহার ফলে উভয় পাকিস্তানের জনসাধারণ পরস্পরকে দেখিবার এবং বুঝিবার সুবিধা লাভ করিবে এবং এমন অবস্থার ‘ সৃষ্টি হইবে যখন একের ভাষা অপরের নিকট আর অপরিচিত বলিয়া মনে হইবে না। এতদ্ব্যতীত ইহার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভাষা প্রশ্নের মীমাংসা হইয়া যাইবে। কারণ পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে কোন মতানক্য দেখা দিলে, পারস্পরিক সমঝােতার দ্বারা তাহা মীমাংসার জন্য চেষ্টা করিতে হইবে, তাহা ভাষার প্রশ্নই হউক আর প্রাদেশিকতার প্রশ্নই হউক।
ঢাকা প্রকাশ
১৬ নভেম্বর, ১৯৫২
পৃ. ৪

সূত্র: ভাষা আন্দোলনের দলিলপত্র – রতন লাল চক্রবর্ত্তী সম্পাদিত