You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিক্ষা সংস্কার কমিটি

পূর্ববঙ্গ শিক্ষা ব্যবস্থা পুণর্গঠন কমিটির এক সভা মাওলানা আকরাম খা সাহেবের সভাপতি গত ১১ই এপ্রিল সম্পন্ন হইয়াছে। এই সভায় প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, সংখ্যালঘুদের শিক্ষা এবং পরীক্ষার প্রশ্ন প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিবেচনা করিবার জন্য ৫টি সাবকমিটি গঠিত হইয়াছে। এই কমিটি যথাসম্ভব সত্বর মূল কমিটির নিকট তাহাদের রিপাের্ট দাখিল করিবেন।
সভায় স্থির হইয়াছে যে, প্রাথমিক শিক্ষার সময় কেবলমাত্র মাতৃভাষার মাধ্যমেই শিক্ষা দেওয়া হইবে এবং ঐ সময়ে কেবলমাত্র মাতৃভাষাই শিক্ষণীয় ভাষা হইবে। এই স্তরে কিছু হাতে-কলমে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করিতে হইবে। এবং ব্যায়াম শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা ও ঐতিহাসিক গল্প প্রভৃতি বিষয় শিক্ষণীয় বিষয়ের অপরিহার্য অঙ্গ হইবে। ইসলামিক , ইতিহাসের উপর অধিকতর গুরত্ব আরােপ করিতে হইবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা দুইটি স্তরে বিভক্ত করা হইবে, ১. ১১ হইতে ১৪ বৎসর বয়স পর্যন্ত জুনিয়র পৰ্য্যায় ২. ১৪ হইতে ১৭ বৎসর পর্যন্ত সিনিয়র পৰ্য্যায়। প্রথম স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হইবে মাতৃভাষা এবং ষষ্ঠ শ্রেণী হইতে বাঙ্গালী শিক্ষার্থীগণকে উর্দু এবং অবাঙ্গালীদিগকে বাঙ্গলা ভাষা শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা হইবে। সপ্তম শ্রেণী হইতে ইংরেজী ভাষা স্বেচ্ছাধীন ভাষা রূপে শিক্ষা দেয়া হইবে। এই স্তরের অন্যান্য শিক্ষণীয় বিষয় হইবে ধর্মীয় শিক্ষা, সমাজবিদ্যা, ইসলামী ইতিহাস সহ সাধারণ ইতিহাস, ভূগােল, সিভিক্স, প্রাথমিক বিজ্ঞান, অক এবং প্রাথমিক সামরিক শিক্ষাসহ ব্যায়াম শিক্ষা। মাধ্যমিক শিক্ষা নিম্নরূপ কয়েকটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হইয়াছে। শিক্ষার্থী তাহাদের ইচ্ছানুসারে যে কোন গ্রুপে শিক্ষালাভ করিতে পারিবে। (ক) সাহিত্য (খ) বিজ্ঞান (গ) ইশ্লামিক ধর্মীয় এবং (ঘ) কারিগরি অথবা শিম্প শিক্ষার পূর্ববর্তী শিক্ষা।
ঢাকা প্রকাশ
১৭ মার্চ, ১৯৪৯
পৃ. ১

সূত্র: ভাষা আন্দোলনের দলিলপত্র – রতন লাল চক্রবর্ত্তী সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!