বাজেট পাশ
গত বুধবার পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থা পরিষদে ১৯৪৭-৪৮ এবং ১৯৪৮-৪৯ সালের ব্যয় বরাদ্দের দাবী গৃহীত হইয়াছে। আলােচনার জন্য নির্দিষ্ট সময় অতীত হওয়ায় অপরাহ্রে ছয় ঘটিকার সময়
স্পীকার বিশেষ ক্ষমতা প্রয়ােগ করিয়া আলােচনা বন্ধ করিয়া দেন।
অর্থ সচিব মিঃ হামিদুল হক জনৈক মুসলিম লীগ সদস্যের বিরুদ্ধে চোরাবাজারী সমর্থনের অভিযােগ করিলে পরিষদে দারুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। লীগ সদস্যটি তীব্র প্রতিবাদ জানাইয়া অভিযােগ অস্বীকার করেন এবং অর্থ সচিবকে তাহার উক্তি প্রত্যাহার করিতে বলেন। অর্থ সচিব তাহার উক্তি প্রত্যাহার করিতে অসম্মত হন। এই সময় বিরােধী দলের নেতা শ্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্পীকারের নিকট জানিতে চাহেন যে, একজন মন্ত্রী পরিষদের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযােগ করিতে পারেন কিনা। ইহার পর অর্থ সচিব ও বিরােধী দলের নেতার মধ্যে জোর তর্ক-বিতর্ক চলিতে থাকে।
একটি যাচাই প্রস্তাব সম্পর্কে বক্তৃতার সময় বিরােধী দলীয় নেতা শ্রী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত “ঢাকা গেজেট” বাঙ্গলা ভাষায় প্রকাশের দাবী জানান। এই দাবীর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন বলেন যে, কায়েদে আজম যেরূপ বলিয়াছেন তদনুযায়ী এই দাবী খুবই ভাল ও যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু বর্তমানে এই দাবী উত্থাপন করা খুবই সমীচীন হইবে বলিয়া তিনি মনে করেন না। যাহা হউক, এই দাবী সম্পর্কে বলা যাইতে পারে যে, ইংরেজীর পরিবর্তে যখন বাংলা চাল হইবে তখন ঢাকা গেজেট’ বাঙ্গালা ভাষায় প্রকাশ করা হইবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, বিরােধী দল গােলযােগের সুযােগে স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করিতেছেন না দেখিয়া তিনি আনন্দিত।
ঢাকা প্রকাশ
৪ এপ্রিল, ১৯৪৮
পৃ. ১
সূত্র: ভাষা আন্দোলনের দলিলপত্র – রতন লাল চক্রবর্ত্তী সম্পাদিত