You dont have javascript enabled! Please enable it!

দৈনিক পাকিস্তান
১১ই নভেম্বর ১৯৬৭

শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে মামলার শুনানী

(গত বৃহস্পতিবার ঢাকার সেন্ট্রাল জেলের অভ্যন্তরে ঢাকার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনারের এজলাসে শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলার শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শুক্রবারের দৈনিক পাকিস্তানে উক্ত শুনানীর আংশিক বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। আজ বাকী অংশ প্রকাশিত হলঃ) ইকবাল হলের ছাত্রদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে বাদীপক্ষের কৌশুলীর জেরার জবাবে জনাব ই এ চৌধুরী বলেন যে, ঘটনার দিন তিনি প্রায় রাত সাড়ে আটটার সময় ইকবাল হলে প্রবেশ করেন এবং সাড়ে এগারটার সময় সে স্থান ত্যাগ করেন। তার সঙ্গে পুলিশ দল ছিল এবং তারা ইকবাল হলের মধ্যে ইতস্ততঃ ছড়িয়ে পড়া ও কয়েকটি কক্ষ থেকে ৩০৮ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করে ট্রাকে ও পুলিশ ভ্যানে করে রমনা থানায় নিয়ে যান। এ সমস্ত আটক ছাত্রদের মধ্যে ৮/৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযােগ প্রমাণ করতে পেরে পুলিশ চার্জশীট দাখিল করে। বর্তমান শাসকশ্রেণী ইকবাল হলের ছাত্রদের উপর সন্তুষ্ট নয় বিধায় তাদের শিক্ষা দেবার জন্য ঐ ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল কিনা, এই মর্মে কৌশুলীর একটি প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বক্তব্যের সত্যতা অস্বীকার করেন।
গতকালকার শেষ সাক্ষী জনাব আমির হােসেনকে জেরার সময় এজলাস কক্ষে আইনজীবি ও শ্রোতাদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। শেখ সাহেবের কৌশুলীর জেরার জবাবে আমির হােসেন বলেন যে, আওয়ামী লীগের বক্তৃতা ছাড়া পল্টন ময়দানে অন্য কোন বক্তৃতা তিনি শুনেননি। এই মামলায় ইতিপূর্বে সাক্ষ্য দেবার সময় তিনি সমন পাননি কিন্তু মৌখিক খবর পেয়ে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। তিনি মদনমােহন বসাক রােডে অবস্থিত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি। ঢাকার শত্রু সম্পত্তি হেফাজতকারীর নিকট তিনি সম্পত্তির জন্য আবেদন করেছেন এবং ঢাকা সদর দক্ষিণ মহকুমা হাকিমের পেশকার জনাব নৈসুন্দীনের বিরুদ্ধে ৩/৪টি মামলা করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের বহু নেতার বিরুদ্ধেই সাক্ষী দিয়েছেন। তাদের মধ্যে শেখ মুজিবর রহমান, শাহ মােয়াজ্জেম, ফজলুল হক (মােনি), ওবায়দুর রহমানের মামলা রয়েছে। মামলার বিবরণে প্রকাশ, ১৯৬৪ সালের ৫ই নবেম্বর ঢাকার পুলিশ সুপার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশানুযায়ী জনাব এম বি আলমের এজলাসে শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযােগ দায়ের করে উল্লেখ করেন যে, ১৯৬৪ সালের ২৯শে মার্চ পল্টন ময়দানে আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী জনসভায় বক্তৃতা করেন যা পাকিস্তান দণ্ডবিধির ১২৪-ক ধারা মােতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভােকেট জনাব জহিরুদ্দীন, আবুল হােসেন, শামসুল হক, মােহাম্মদ উল্লা, এ এইচ চৌধুরী, শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন ও আরও অনেকে।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!