দৈনিক পয়গাম
৮ই নভেম্বর ১৯৬৭
দায়রা ৭৭ কর্তৃক দণ্ডাদেশ বহাল
শেখ মুজিবের মামলা
(স্টাফ রিপাের্টার)
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবর রহমান ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে যে আপীল করিয়াছিলেন, তাহার রায় প্রদান করা হইয়াছে। ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ জনাব কায়সার আলী ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত কারাদণ্ডাদেশের আদেশ বহাল রাখিয়াছেন। তবে মাননীয় জজের মতে ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত ১৫ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ কঠিন হইয়া যায়। ফলে তিনি (মাননীয় জজ) বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশের মেয়াদ ১৫ (পনর) মাস হইতে কমাইয়া ৮ (আট) মাস করেন।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযােগ্য যে, ঢাকার পল্টন ময়দানে আপত্তিকর বক্তৃতাদানের দায়ে ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব আফসারউদ্দিন আহমদ শেখ মুজিবর রহমানকে ১৫ (পনের) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। চলতি সালের ২৭ শে এপ্রিল তারিখে প্রদত্ত মাননীয় ম্যাজিষ্ট্রেটের উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে শেখ মুজিব আপিল করিলে উহার শুনানীর জন্য গ্রহণ করা হয় এবং বিগত ২৮ শে অক্টোবর জনাব কায়সার আলীর এজলাশে উহার শুনানী শুরু ও সমাপ্ত হয়।
মাননীয় জজ তাহার রায়ে মন্তব্য করেন যে, শেখ মুজিবের বক্তৃতা শ্রবণের পর বিভিন্ন শ্রেণীর নাগরিকদের মধ্যে শত্রুতা ও ঘৃণার উদ্রেক হইতে পারে বলিয়া বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট যে অভিমত ব্যক্ত করিয়াছেন উহা ঠিক নহে। তবে মাননীয় জজ তাহার রায়ে অতঃপর বলেন যে, শেখ মুজিবের বক্তৃতা শ্রবণ করার পর পূর্ব পাকিস্তানী শ্রোতাদের মনে দেশের এই অংশের অর্থনৈতিক ও দেশরক্ষার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভয় ও ভীতির সঞ্চার করিতে পারে।
বাদীপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন যথাক্রমে পাবলিক প্রসিকিউটর ও এসিষ্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব আবদুল আলীম ও জনাব মেসবাহ উদ্দিন আহমদ। শেখ মুজিবের পক্ষ সমর্থন করেন এডভােকেট জনাব এ, সালাম খান ও এডভােকেট জনাব জহির উদ্দিন।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব