আজাদ
১০ই নভেম্বর ১৯৬৭
শেখ মুজিবের মামলা
সরকার পক্ষের ৩ জন সাক্ষীর জেরা সমাপ্ত
(কোর্ট রিপাের্টার)
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদধে আনীত রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় আরও ৩ জন সরকারপক্ষের সাক্ষীর জেরা সমাপ্ত হয়। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ঢাকার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার জনাব এম, এস, খানের কোর্টে আওয়ামী লীগ প্রধানের বিচার চলিতেছে।
১৯৬৪ সালের ২৯শে মার্চ পল্টন ময়দানের এক জনসভায় ‘আপত্তিকর’ বক্তৃতাদানের অভিযােগে পাকিস্তান ফৌজদারী দণ্ডবিধির ১২৪(ক) ধারা অনুযায়ী শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে এই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা আনয়ন করা হইয়াছে।
এই মামলায় অন্যতম সাক্ষী ও শ্রমিক নেতা বলিয়া কথিত আমীর হােসেন জেরার জবাবে জানান, তিনি ইতিপূৰ্ব্বে শেখ মুজিবর রহমান, শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন, শেখ ফজলুল হক মনি, ওবায়দুর রহমান, এ, মােমেন প্রমুখ নেতাদের বিরুদ্ধে আনীত বিভিন্ন মামলায় সরকারপক্ষে সাক্ষ্য দিয়াছেন। জেরার জবাবে আমীর হােসেন স্বীকার করেন যে, নূরজাহান বলিয়া জনৈকা যুবতী তাহার বিরুদ্ধে একটি মামলা করিয়াছিল। অপর এক প্রশ্নের জবাবে আমীর হােসেন জানায়, বর্তমানে তাহার বসবাসের কোন সুনির্দিষ্ট বাসস্থান নাই এবং শত্রু সম্পত্তি ইজারার জন্য সরকারের নিকট দরখাস্ত করিয়াছেন। আমীর হােসেন আরও জানান যে, ঢাকার এস, ডি, ওর কেরানীর বিরুদ্ধে তিনি ৩টি মামলা দায়ের করিয়াছেন।
ঢাকার তৎকালীন এস, পি, সৈয়দ মান্নান বখশ জেরার জবাবে অস্বীকার করেন যে, শেখ মুজিবর রহমানের জনসভায় বক্তৃতার সময় তিনি পাকিস্তানের বাহিরে থাকিলেও পরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি বিবাদীর বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। তৎকালীন অতিরিক্ত এস, পি জনাব এমাদুদ্দিন চৌধুরী জেরার জবাবে জানান যে, তিনি ইতিপূৰ্ব্বে ইকবাল হলে ছাত্র গােলযােগ সংক্রান্ত অপর একটি মামলায় সাক্ষ্যদান করেন। উক্ত গােলযােগ উপলক্ষে ইকবাল হলের ৩০৮ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয় বলিয়া অতিরিক্ত এস পি স্বীকার করেন।
মামলার শুনানী ১৭ই নবেম্বর পর্যন্ত স্থগিত হইয়াছে।
আওয়ামী লীগ প্রধানের পক্ষে এডভােকেট জনাব জহিরুদ্দিন, জনাব এম, এ, রব, জনাব মুজিবর রহমান ও শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন এবং সরকারপক্ষে জনাব আবদুল আলিম ও কোর্ট ডি এসপি জনাব আবদুল খালেক মামলা পরিচালনা করেন।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব