You dont have javascript enabled! Please enable it! 1952 | ভাষা আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

ভাষা আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ
গণ-আন্দোলনের বিস্ফোরক চরিত্র নিয়ে একুশের প্রকাশ

নদীমাতৃক বাংলাদেশ। এর অনেক শহরই নদ-নদীবিধৌত। যেমন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ইত্যাদি। ঢাকা জেলার অন্তর্গত মহকুমা শহর নারায়ণগঞ্জ ইতিহাসখ্যাত বন্দর শহর। একদা বস্ত্রশিল্পের জন্য খ্যাত নারায়ণগঞ্জ রাজনৈতিক বিচারে একটি ঐতিহাসিক শহর। নারায়ণগঞ্জে ভাষা আন্দোলন গ্রন্থে রাজনীতিমনস্ক সংস্কৃতিমান লেখক রফিউর রাব্বির মন্তব্য, ‘শীতলক্ষ্যাবিধৌত নারায়ণগঞ্জ বন্দরনগরীর পরিচিতি পেয়েছে কয়েক হাজার বছর আগে। নারায়ণগঞ্জের মসলিন প্রায় ৩০০০ বছর আগেই মিসর, রােমসহ বিশ্বের অনেক দেশে সমাদৃত হয়েছে।’
এ বক্তব্য খ্যাতনামা ইতিহাসবিদদের মসলিনখ্যাত সােনারগাঁকে কেন্দ্র করে। আধুনিক কালেও ইংরেজ আমল থেকে এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের খ্যাতি রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট বন্দর শহর হিসেবে তার শিল্পাঞ্চল নিয়ে। যাতায়াতব্যবস্থায়ও নারায়ণগঞ্জ রেলপথ, জাহাজপথ নিয়ে বিশিষ্ট। শিক্ষা- সংস্কৃতি চর্চার দিক থেকেও অগ্রসর শহর নারায়ণগঞ্জ। এসব ঘটনা ইতিহাস- সংশ্লিষ্ট।
সর্বোপরি প্রাদেশিক রাজধানী শহর ঢাকার নিকটবর্তী মহকুমা শহর বলে রাজনীতির উত্তাপ সহজেই স্পর্শ করে নারায়ণগঞ্জকে। বিশেষ করে শ্রমিকঅধ্যুষিত শিল্পাঞ্চল হওয়ার কারণে। শ্রমিক রাজনীতি এ এলাকার বৈশিষ্ট্য মূলত চটকল, বস্ত্র কারখানাগুলাের কল্যাণে। আর এ কারণে রাজনৈতিক প্রগতিশীলতার বিষয়টিও এখানে উল্লেখযােগ্য।
পূর্ববঙ্গে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই সূচিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সংগঠিত পর্যায়ে দুভাবে বিকশিত হয়ে ওঠে- ১৯৪৮-এর মার্চে এবং ১৯৫২-এর ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালন রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বীকৃতির (১৯৫৬) পূর্ব পর্যন্ত বিশেষ রাজনৈতিক চরিত্র অর্জন করেছিল। নারায়ণগঞ্জ এদিক থেকে ব্যতিক্রম নয়।
১৯৪৮-এর মার্চের (১১ মার্চ) আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের অংশগ্রহণ যথারীতি। এদিন শহরে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘট ও হরতাল পালিত হয়। শিক্ষায়তনগুলাে বন্ধ। স্থানীয় কারখানাগুলােতে ধর্মঘট এবং ছাত্র-শ্রমিকদের সম্মিলিত বিক্ষোভ মিছিল। এ ছাড়া শহরে ছাত্রছাত্রীদের মিছিলের বিবরণ মেলে বিভিন্ন সূত্রে- সংবাদপত্রে ও ব্যক্তিগত রচনায়। মার্চের এ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছাত্রনেতা শামসুজ্জোহা, বজলুর রহমান, বদরুজ্জামান, মফিজ উদ্দিন আহমদ, সুলতান মাহমুদ মল্লিক, কাজী মজিবর, শেখ মিজান প্রমুখ (রফিউর রাব্বি)।
নারায়ণগঞ্জে ১৯৪৮-এর মার্চের আন্দোলন এভাবে ছাত্র-শ্রমিক বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। ইতিমধ্যে ঢাকায় তমদ্দুন মজলিস প্রধান ও সংগ্রাম পরিষদ মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে ১৫ মার্চের পর থেকে আন্দোলন স্থগিত করে। নেপথ্য কারণ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মােহাম্মদ আলী জিন্নাহর সংক্ষিপ্ত ঢাকা সফর। স্বভাবতই নারায়ণগঞ্জেও আন্দোলন বন্ধ থাকে।
আন্দোলন স্থগিত করা যে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তার প্রমাণ মেলে পরবর্তী সাড়ে তিন বছর পর ঢাকায় একুশের (১৯৫২) বিস্ফোরক আন্দোলনের সূচনা, তা- ও প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের রাষ্ট্রভাষাবিষয়ক উসকানিমূলক বক্তৃতার কারণে (‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দুই হতে যাচ্ছে’)। এই বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার ছাত্রসমাজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছাত্রধর্মঘট, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার সূচনা ঘটায়। গঠিত হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসভায় একুশে ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এসব ঘটনার প্রভাব পড়ে নারায়ণগঞ্জে। বিক্ষুব্ধ নারায়ণগঞ্জে ছাত্রধর্মঘট, বিক্ষোভ মিছিল, স্লোগান ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। দৈনিক আজাদ-এ প্রকাশিত সংবাদমতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে স্থানীয় রহমতল্লাত ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এক সভায় ছাত্রছাত্রীরা মিলিত হয়। এরপর একুশের কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতিপর্বে কর্মতৎপরতা। গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। আহ্বায়ক মফিজউদ্দিন আহমদ এবং যুগ্ম আহ্বায়ক আজগর হােসেন ভূঁইয়া।
সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন একুশের কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য। পােস্টার, ইশতেহার ইত্যাদির মধ্য দিয়ে প্রচারের কাজ শুরু হয়। পােস্টার লেখায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন মুস্তাফা মনােয়ার (দশম শ্রেণির ছাত্র)। এসে গেল ২১ ফেব্রুয়ারি। এদিন শহরের সমস্ত শিক্ষায়তনে ধর্মঘট, সর্বাত্মক হরতাল এবং বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় সক্রিয় নারায়ণগঞ্জ, ভিন্ন এক নারায়ণগঞ্জ।
এ সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আজাদ-এ পাঠানাে এক সংবাদ প্রতিবেদনের প্রাসঙ্গিক তথ্য নিম্নরূপ :
‘আজ এখানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে হরতাল পালন করা হইয়াছে। সমস্ত দিন ধরিয়া দোকানপাট, বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যাবতীয় স্কুলকলেজ বন্ধ থাকে এবং ছাত্রগণ স্লোগানসহকারে শােভাযাত্রা বাহির করিয়া শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। অপরাহ্নে টানবাজার ময়দানে একটি জনসভা হয়। সভায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করিয়া বিভিন্ন বক্তা বক্তৃতা করেন।’ (আজাদ, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২)।
ওই দিনই ঢাকায় ছাত্র হত্যার খবর নারায়ণগঞ্জে পৌছায়। ছাত্র-জনতা প্রচণ্ড রকম ক্ষুব্ধ। একই দিন বিকেলে পূর্বোক্ত প্রাঙ্গণে সমাবেশ। তাতে বক্তৃতা করেন আলমাছ আলী, বজলুর রহমান, মুস্তাফা সারওয়ার প্রমুখ। প্রধান অতিথি প্রবীণ রাজনীতিবিদ আবুল হাশিম।
যুবলীগ নেতা শফি হােসেন, আওয়ামী লীগ নেতা শামসুজ্জোহা প্রমুখের সূত্রে জানা যায় যে ছাত্র হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নারায়ণগঞ্জ উত্তেজনায় উত্তপ্ত এক শহর। দিনভর মিছিল আর স্লোগান ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ ‘খুনি নুরুল আমিনের বিচার চাই’ ইত্যাদি। এ পরিস্থিতি বিরাজ করে পরবর্তী কয়েকটি দিন। আন্দোলন ক্রমশ তীব্র হয়ে ওঠে। আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে যায় আশপাশের এলাকায়।
২৩ ফেব্রুয়ারিও নারায়ণগঞ্জে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। এ সংবাদের ধারাবাহিকতায় ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত আজাদ পত্রিকায় লেখা হয় : ‘অপরাহ্নে চাষারায় (চাষাঢ়া) তুলারাম (তােলারাম) কলেজের রিকুইজিশন করা জমিনে এক বিরাট জনসভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রমিকনেতা ফয়েজ আহমদ। শফি হােসেনসহ অন্য শ্রমিকনেতারা বক্তৃতা করেন মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবি করে।
ইতিপূর্বে মডার্ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস মমতাজ বেগমের নেতৃত্বে ওই স্কুলের ছাত্রী ও শিক্ষকদের এক বিশাল মিছিল বিক্ষোভে, প্রতিবাদে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে তাঁরাও চাষাঢ়া জনসভায় যােগ দেন। ছাত্রছাত্রী, শ্রমিক-জনতার এ সমাবেশে কয়েক হাজার ক্ষুব্ধ মানুষের সমাগম ঘটে।
আন্দোলনের এ ধারাবাহিকতায় ২৫ ফেব্রুয়ারিও একই ধারায় পার হয়। দৈনিক আজাদ-এর সংবাদভাষ্যে বলা হয় : ‘অদ্য এখানকার শিল্প এলাকায় পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। যানবাহন ও দােকানপাট সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ থাকে এবং প্রাতঃকাল হইতে জনসাধারণ ছােট ছােট দলে বিভক্ত হইয়া বিক্ষোভ প্রদর্শন করিতে থাকে। মেয়েরা বিক্ষোভে যােগদান করে।’ (২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২)।
এ পর্বে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক-জনতা ও শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন চরিত্রে হয়ে ওঠে গণ-আন্দোলন, যা তুলনায় ঢাকার চেয়েও অধিক অগ্নিগর্ভ এবং তা প্রধানত শ্রমিকদের অংশগ্রহণের কারণেও বটে। একইভাবে এখানে ছাত্রী ও মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি। অবস্থাদৃষ্টে স্থানীয় সিটি মুসলিম লীগ তাদের কার্যকরী কমিটির এক জরুরি সভায় মিলিত হয়ে ‘এক প্রস্তাবে বর্বরােচিত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের সাসপেন্ড ও বন্দী ছাত্রদের মুক্তি দাবি করে।’ একই সংবাদভাষ্যে আরও বলা হয় : ‘অপর একটি প্রস্তাবে ১৪৪ ধারা জারীর নিন্দা করিয়া ইহার আশু প্রত্যাহার দাবী করা হয়। (আজাদ, ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২)।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জে পরিস্থিতির বিস্ফোরণ ঘটে প্রশাসনের অর্বাচীন পদক্ষেপে। ২৯-এ ফেব্রুয়ারি সকালে পুলিশ পূর্বোক্ত মমতাজ বেগমকে এক মিথ্যা অভিযােগের দায়ে গ্রেপ্তার করে অবাঙালি মহকুমা হাকিমের আদালতে হাজির করে। অভিযােগ স্কুলের তহবিল তছরুপ। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্ৰছাত্রী- জনতা আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হয়ে নির্দোষ শিক্ষিকার বিনা শর্তে মুক্তি দাবি করে। কিন্তু প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি।
বরং বিকেলে পুলিশ মমতাজ বেগমকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হলে বিশাল এক ছাত্র-জনতা চাষাঢ়া স্টেশনে পুলিশকে বাধা দেয়। শুরু হয় জনতা- পুলিশ সংঘর্ষ। পুলিশের বেপরােয়া লাঠিচার্জে বহুসংখ্যক ছাত্রছাত্রী ও বিক্ষোভকারী আহত হন, যাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ( আজাদ, ১ মার্চ ১৯৫২)। জনতা-পুলিশের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে অবস্থা আয়ত্তের বাইরে যেতে থাকলে ঢাকা থেকে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এসে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে শেষ পর্যন্ত মমতাজ বেগমকে ঢাকায় নিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে।
পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে নুরুল আমিন সরকার ভয়ংকর এক ষড়যন্ত্র ও সেই সঙ্গে ভারতবিরােধী বক্তব্যসহ অপপ্রচার শুরু করে। ষড়যন্ত্রের শিকার এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু অজ্ঞাত আততায়ীর গুলিতে, আহত একজন আনসার সদস্য। এ ঘটনার জের ধরে দ্রুত তৎপরতা মুখ্যমন্ত্রীর, নিহত পুলিশ পরিবার ও আহত আনসারকে সাহায্যদান, ভারতবিরোধী প্রচারণা এবং নারায়ণগঞ্জে কারফিউ জারি, ব্যাপক গ্রেপ্তার, সাম্প্রদায়িক স্লোগান ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার ও গ্রেপ্তার ইত্যাদি ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রচণ্ড দমননীতির সাহায্যে মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসন অবস্থা আয়ত্তে আনে। গ্রেপ্তার করা হয় স্থানীয় এমএলএ ওসমান আলী সাহেবকে।
মুসলিম লীগ প্রশাসন ও পুলিশ এ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ঢাকায় গুলিতে বিক্ষোভকারী ভাষাসংগ্রামীদের হত্যা করে এবং নারায়ণগঞ্জে প্রচণ্ড দমননীতি, নির্যাতন ও ব্যাপক গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন ও তার পুলিশ প্রশাসন আপাতত গদি রক্ষায় সক্ষম হয়। উল্লেখ্য যে ১৯৪৮-৫২ পর্বেও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ প্রদেশের প্রশাসনের উচ্চপদে ছিল অবাঙালি কর্মকর্তাদের একচেটিয়া প্রাধান্য। তবে বাঙালি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও, দু-একজন ব্যতিক্রম বাদে, সরকারের, সর্বাধিক পুলিশ বিভাগের সমর্থনে দমননীতি চালিয়ে গেছেন।

সূত্র: ভাষা আন্দোলন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া – আহমদ রফিক