১ এপ্রিল ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ – বগুড়া
বগুড়ায় গুজব রটে সেখানকার পাকবাহিনী পালিয়েছেন। ইপিআর এর সুবেদার আকবর গাজিউল হকের সাথে দেখা করে আরিয়া আক্রমনের অনুমতি চাইলেন। ৩৯ জন ইপি আর ৫০ জন পুলিশ ২০ জন সাধারন যোদ্ধা নিয়ে বাহিনী তৈরি হয়ে গাজিউল হকের অনুমতি নিয়েই আরিয়া অস্র গুদাম আক্রমন হয়। পাক বাহিনীকে রক্ষায় বিমান আক্রমন শুরু হল। ক্যান্টনমেন্ট এর দক্ষিন দিক থেকে ৫০০ গজের মধ্যে এদিন দক্ষিনা বাতাসে জনতা মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ছিল। এর ফলে বাঙ্গালি সৈনিকদের সুবিধা হয়েছিল। আরিয়াতে সাদা পতাকা উড়ে। যোদ্ধা মাসুদ এখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এখান থেকে পাওয়া গেল ৫৮ ট্রাক অস্র (গাজিউল) সুবেদার মতির মতে ৮০ ট্রাক) গোলাবারুদ। মাসুদকে সামরিক কায়দায় সমাহিত করা হয়। এ যুদ্ধে নিহত হয় ২১ জন (গাজিউল হক) (সুবেদার মতির মতে ৩ জন) পাক সেনা। এখানে আত্মসমর্পণ করে ক্যাপ্টেন নুর আহমেদ সহ ৬৮ জন। সুবেদার আকবর ক্যাপ্টেন নুরের পরিবার নিজ দায়িত্বে হেফাজতে নেন। পরে এদের বন্দী রাখা অবস্থায় জনতা জেল আক্রমন করে ছিনিয়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এখানে সুবেদার আবুল কাশেমের এক প্লাটুন ৩ বেঙ্গলের বাঙ্গালী সৈন্য ছিল। তাদের আটক করে নিরাপদ হেফাজতে রাখা হয়। খবর পেয়ে মেজর নাজমুল বগুড়ায় আসেন তিনি হাবিলদার আকবরকে প্রশংশিত ও অভিনন্দিত করেন।
বগুড়ায় গাজিউল হক ছাড়াও ডাঃ জাহিদুর রহমান এমএনএ, মুজিবুর রহমান আক্কেলপুরী এমএনএ, পুলিশ লাইনের আরআই হাতেম আলী, ডাঃ গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসন ব্যাপক সাহায্য সহযোগিতা করে। হাবিলদার আকবর জিলা স্কুলে প্রশিক্ষন ক্যাম্প স্থাপন করেন। মেজর নাজমুল কিছু সৈন্য বাঘাবাড়ী ঘাটে কিছু সৈন্য প্রেরন করেন। সুবেদার মতিকে বাঘাবাড়ী ঘাটে অধিয়ায়ক করা হয়। মেজর নাজমুল হাবিলদার আকবর সহ কিছু সৈন্য মহাস্থানগড়ে পাঠান। ঘোড়াঘাটে অবস্থান নেয়া ৩ বেঙ্গলের ক্যাপ্টেন আনোয়ারকে অস্র যানবাহন দিয়ে সাহায্য করার জন্য একজন এমপিএ, একজন হাবিলদার দুজন নায়েক সৈন্য বগুড়ায় আসে। মেজর নাজমুল তাদের যানবাহন ও অস্র দিয়ে সাহায্য করেন। তাদের প্রথমে এক ট্রাক এক জীপ ভর্তি অস্র পরে ৮ ট্রাক ও দুটি ৩ ইঞ্চি মর্টার দেয়া হয়। সিরাজগঞ্জের এসডিও শামসুদ্দিন, শাহজাদপুরের এমপিএ আব্দুর রহমান সুবেদার মতির সাথে আলাপ আলোচনা করে হাবিলদার আকবরকে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ নিয়ে আসেন এবং পাবনার বেরায় তার দল মোতায়েন করেন।