দৈনিক ইত্তেফাক
২১শে মে ১৯৬৬
৬-দফার পক্ষে ব্যাপক গণসমর্থনে সরকারের আতঙ্ক
গণদাবী নস্যাৎ করার জন্য দেশরক্ষা আইনের অপপ্রয়ােগের নিন্দা
করাচী আওয়ামী লীগের সভায় নেতৃবৃন্দের আশুমুক্তি
ও জরুরী অবস্থার অবসান দাবী
(সংবাদদাতা প্রেরিত)
করাচী, ১৮ই মে গতকাল রাত আটটায় করাচী প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ কার্যকরী সংসদের এক সভা লীগের স্থানীয় অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন করাচী প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জনাব এস, পি লোধী।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এক প্রস্তাবে পাকিস্তান দেশরক্ষা আইনবলে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজউদ্দিন আহমদ, শ্রম সম্পাদক জনাব জহুর আহমদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ জনাব নূরুল ইসলাম চৌধুরী, কার্যকরী সংসদের সদস্য জনাব মােশতাক আহমদ, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ সম্পাদক জনাব এম, এ, আজীজ এবং রাজশাহী আওয়ামী লীগ সভাপতি জনাব মুজিবর রহমানকে গ্রেফতার করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করিয়া শেখ মুজিবের উপর বিভিন্ন প্রকার হয়রানির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। সভায় অবিলম্বে জরুরী অবস্থার প্রত্যাহার দাবী করা হয়। সভায় এই মর্মে অভিমত জ্ঞাপন করা হয় যে, ৬দফার পক্ষে ব্যাপক গণসমর্থন দৃষ্টে সরকার আতংকগ্রস্ত হইয়া শেখ মুজিবের ন্যায় জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে হীনপন্থা গ্রহণ করিতেছেন। সভায় এইমর্মে দৃঢ় অভিমত জ্ঞাপন করা হয় যে, শেখ মুজিব ও অন্যান্য জননেতার বিরুদ্ধে দেশরক্ষা আইন প্রয়ােগ উক্ত আইনের অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নহে এবং গণদাবী নস্যাৎ করার জন্য উক্ত আইন নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ব্যবহার
করা হইতেছে। সভায় অভিমত জ্ঞাপন করা হয় যে, পূর্ণ শান্তি বিরাজ করা সত্ত্বেও দেশে জরুরী অবস্থা বহাল রাখার জন্য বর্তমান শাসন কর্তৃপক্ষই দায়ী।
অভাব দমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ হইতে সরকারকে বিরত থাকার জন্যও দাবী জানানাে হয়। প্রস্তাবে শেখ মুজিবর রহমান, নবাবজাদা নসরুল্লাহ খান, খাজা মােহাম্মদ রফীক, জনাব সিদ্দিকুল হাসান ও জনাব তাজুদ্দিনসহ সকল রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তিদান করিয়া দেশে শান্তি ও শৃংখলা ফিরাইয়া আনার দাবী জানানাে হয়।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব