You dont have javascript enabled! Please enable it!

দৈনিক পয়গাম
৫ই মে ১৯৬৬

আওয়ামী লীগের জনসভায়
বিশিষ্ট সমাজ কর্মীর উপর শারীরিক নির্যাতন
(নিজস্ব প্রতিনিধি প্রেরিত)

যশাের, ৪ঠা মে।-গত ১৫ই এপ্রিল স্থানীয় টাউন হল ময়দানে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়ােজিত এক জনসভায় তৎকালীন মুসলিম লীগের সদস্য কারী মােহাম্মদ শহীদকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করা হয় বলিয়া জানা গিয়াছে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ উক্ত জনসভায় সভায় শেখ মুজিব যখন প্রেসিডেন্ট আইয়ুবকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করিতেছিলেন ও সরকারের বিরুদ্ধে মানহানিকর কথা বলিতেছিলেন, জনাব শহীদ তখন শেখ সাহেবকে কয়েকটি প্রশ্ন করার জন্য মঞ্চে উঠেন। শেখ সাহেব তাঁহাকে পূর্ব হইতেই জানিতেন। তাই ব্যাপার গুরুতর দেখিয়া তিনি তাঁহাকে (জনাব শহীদকে) পাগল বলিয়া আখ্যায়িত করিলে জনাব মিয়াজী উকিল তাহাকে গলা ধাক্কা দিয়া ডিষ্ট্রিক্ট বাের্ড অফিসের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে লইয়া যান। অতঃপর তিনি সৈয়দ আলী মােক্তারের সহায়তায় তাঁহাকে উপর্যুপরী কিল-ঘুষি মারেন।
মিয়াজী উকিলের প্রচণ্ড লাথিতে জনাব শহীদের বাম পায়ের উরুর নীচের হাড় ভাঙ্গিয়া যায়। ফলে তিনি লুটাইয়া পড়িয়া যান। এই সময় তাঁহার চশমা ভাঙ্গিয়া চোখের এক কোণেও আঘাত লাগে। ইত্যবসরে থানা সাবইনস্পেক্টর ও জনৈক হাওয়ালার অকুস্থলে হাজির হইলে তাঁহারা সরিয়া পড়েন। তখন তাঁহাকে কয়েকজনে ধরাধরি করিয়া উঠাইয়া হাসপাতালে প্রেরণ করে।
হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তারের সেবা শুশ্রুষার ফলে প্রায় ২ ঘণ্টা পরে তিনি জ্ঞান ফিরিয়া পান।
প্রকাশ, পরের দিন কোতওয়ালী থানার ওসি ব্যাপারটি জানিতে পারিয়া মিয়াজী উকিল ও সৈয়দ আলী মােক্তারকে গ্রেফতার করিয়া জেল হাজতে পাঠান। তাঁহাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় নাই বলিয়া জানা গিয়াছে। এ ব্যাপারে আরও তদন্ত চলিতেছে।
বর্তমানে জনাব কারী মােহাম্মদ শহীদের অবস্থা সন্তোষজনক হইলেও তিন মাসের মধ্যে তাঁহাকে হাসপাতাল হইতে ছাড়া হইবে না বলিয়া জানা গিয়াছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যাইতে পারে, ১৯০৬ স্যার সলিমুল্লাহ ও কায়েদে আজম কর্তৃক সংগঠিত তৎকালীন মুসলিম লীগের তিনি একজন সদস্য। তিনি ঢাকা জেলার বাসিন্দা।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!