You dont have javascript enabled! Please enable it!

সংবাদ
২৬শে এপ্রিল ১৯৬৬

আতাউর রহমান খানের প্রতিবাদ

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান গতকল্য (সােমবার) সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, শেখ মুজিবর রহমানকে অভিযােগের নামে যেভাবে হয়রানি করা হইতেছে। উহাতে দেশের জনসাধারণ স্তম্ভিত হইয়াছে। জনসভায় বক্তৃতাদানের অভিযােগে পাকিস্তান রক্ষা আইন ও জননিরাপত্তা আইন বলে সরকার তাঁহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিতেছেন। কিন্তু তাঁহাকে স্থান হইতে স্থানান্তর করণের যে পদ্ধতি অবলম্বিত হইয়াছে, উহা অতিশয় পরিতাপজনক। রাজনৈতিক নির্যাতনের ইতিহাসে উহা নজীরবিহীন।
তিনি বলেন, একটি জেলায় শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হইতেছে, উক্ত মামলায় জামিন হওয়ার পূর্বেই অপর এক জেলায় তাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হইতেছে। পুলিশ স্বেচ্ছা মােতাবেক এক জেলা হইতে অপর জেলায় তাঁহাকে স্থানান্তরের যে পদ্ধতি অবলম্বন করিতেছে উহা ষড়যন্ত্রমূলক বলিয়া অনুমিত হয়।
এহেন পরিস্থিতিতে জনাব আতাউর রহমান খান সরকারকে স্মরণ করাইয়া দেন এবং বলেন যে, লাহাের প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন দান, প্রাপ্তবয়স্কের ভােটে নির্বাচিত পার্লামেন্টারী সরকার কায়েম, দুই অর্থনীতি এবং পূর্ব পাকিস্তানীদের উপর পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব অর্পণ করিতে হইবে। ইহা কোন ব্যক্তিবিশেষ বা দলের দাবী নহেইহা সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের দাবী। উক্ত ন্যায্য দাবী পূরণ না করিয়া প্রেসিডেন্ট ও গভর্ণর সহ সরকারী মুখপাত্ররা আমাদিগকে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী বলিয়া অভিহিত করার চেষ্টা করিতেছেন। কিন্তু তাঁহার দীর্ঘ বিবৃতি-বক্তৃতায় আমাদের দাবীসমূহের একটিকেও অযৌক্তিক অথবা অন্যায্য প্রমাণ করিতে সমর্থ হন নাই। জনসাধারণের ন্যায্য দাবী পূরণ না করিয়া রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপর নির্যাতন চালান যুক্তিযুক্ত নহে। কোনরূপ নিৰ্যাতনই জনসাধারণের ন্যায্য দাবী বানচাল করিতে পারিবে না বলিয়া জনাব খান উল্লেখ করেন।
অবশেষে তিনি শাসক মহলের নির্যাতনমূলক কার্য্যের মােকাবেলায় দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধভাবে দণ্ডায়মানের আহ্বান জানান। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পরাভূত করিয়া দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অদ্য দেশবাসী-বিশেষ করিয়া গণতান্ত্রিক দলসমূহকে দেশব্যাপী ঐকবদ্ধ আন্দোলন শুরু করার জন্য জনাব আতাউর রহমান খান আবেদন জানান।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!