You dont have javascript enabled! Please enable it!

আজাদ
২৯শে এপ্রিল ১৯৬৬

খাদ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে শেখ মুজিব

ঢাকা, ২৮শে এপ্রিল।- পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান অদ্য এক বিবৃতিতে প্রদেশের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি মােকাবেলার জন্য অবিলম্বে বাধ্যতামূলক রেশনিং প্রবর্তন, টেষ্ট রিলিফের ব্যবস্থা ও লেভীতে সংগৃহীত খাদ্য বাজারে ছাড়িবার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দেশের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতিকে দুর্ভিক্ষ বলিয়া অভিহিত করেন।
সংবাদপত্রে প্রদত্ত উপরােক্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, প্রদেশের খাদ্য পরিস্থিতি এমন চরম আকার ধারণ করিয়াছে যে, এই ঢাকা শহরেও প্রতি মণ চাউল ৪০ টাকার উর্দ্ধে বিক্রয় হইতেছে।
সম্প্রতি প্রদেশে ব্যাপক সফরের অভিজ্ঞতার আলােকে তিনি বলেন যে, লেভীর মাধ্যমে অতিরিক্ত ধান আদায়ের ফলে কোন কোন বাজারে বর্তমান চাউল পাওয়াই যাইতেছে না। লেভীর মাধ্যমে জনসাধারণের নিকট হইতে অতিরিক্ত ধান আদায় করিয়া লওয়ার ফলে স্থানীয় বাজারসমূহ আজ চাউলশূন্য হইয়া পড়িয়াছে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
জনসাধারণের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে যাহাতে অবাধে চাউল বিক্রয় হইতে পারে সেই ব্যাপারে সরকার কোন বিকল্প ব্যবস্থাই করেন নাই বলিয়া শেখ মুজিব অভিযােগ করেন।
এই প্রসংগে তিনি বলেন যে, বাধ্যতামূলক লেভীর মাধ্যমে ধান আদায় অবশ্যই বাধ্যতামূলক রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করিয়া পূরণ করা উচিত। আওয়ামী লীগ নেতা আরাে বলেন যে, ক্ষতিকর পাটনীতির ফলে জনসাধারণ পাটের ন্যায্যমূল্য লাভে বঞ্চিত হওয়ায় এবং সমস্ত উন্নয়ন কার্য্য সাময়িকভাবে পরিত্যক্ত হওয়ার ফলে যে বেকার সমস্যার উদ্ভব হইয়াছে। তাহাতে জনসাধারণ আজ চাউল ক্রয়ের ক্ষমতা হারাইয়াছে।
এতদ্ব্যতীত বিড়ি প্রস্তুতে টেপাতার ব্যবহার নিষিদ্ধ করিয়া অর্ডিন্যান্স জারী করার ফলে এই প্রদেশের ৭ লক্ষ বিড়ি শ্রমিককেও আজ বেকার জীবনের দুর্বিষহ যাতনা ভােগ করিতে হইতেছে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
আওয়ামী লীগ প্রধান অত্যন্ত আফসােস করিয়া বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে উপর্যপুরি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও সরকার সার্টিফিকেটের মাধ্যমে কর ও অন্যান্য শুল্ক অব্যাহত গতিতে আদায় করিতেছেন।
অনাবৃষ্টির ফলে বােরাে ফসলেরও মারাত্মক ক্ষতি হইয়াছে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন। প্রদেশের চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থার মােকাবেলার জন্য সরকার এ পর্যন্ত পরিকল্পিত উপায়ে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেন নাই বলিয়া শেখ মুজিব উল্লেখ করেন।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!