You dont have javascript enabled! Please enable it! 1966.03.03 | জননিরাপত্তা আইনে শেখ মুজিবরের বিরুদ্ধে মামলা- গতকল্য ৪ জন সরকারী সাক্ষীর জেরা সমাপ্ত | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক ইত্তেফাক
৩রা মার্চ ১৯৬৬

জননিরাপত্তা আইনে শেখ মুজিবরের বিরুদ্ধে মামলা
গতকল্য ৪ জন সরকারী সাক্ষীর জেরা সমাপ্ত
(কোর্ট রিপাের্টার)

গতকল্য (বুধবার) ঢাকার অন্যতম প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব এম, এ, মালিকের কোর্টে জননিরাপত্তা আইনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত মামলায় ৪ জন সাক্ষীর জেরা সমাপ্ত হয়। এই দিন সরকার পক্ষের যে ৪ জন সাক্ষীর জেরা করা হয়, তাঁহাদের মধ্যে রহিয়াছেন ঢাকা কোর্টের অন্যতম প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব আফসারউদ্দিন আহমেদ, গভর্নমেন্ট রিপাের্টার জনাব মােজাম্মেল এবং মেসার্স হায়াত ও ইসমাইল নামক দুইজন মােহাজের। জনাব মােজাম্মেল তাহার জেরার জবাবে কোর্টে স্বীকার করেন যে, জনাব মুজিবর রহমানের বক্তৃতাকালে ২/৩ বার মাইক নষ্ট হইয়া যাওয়ায় তাঁহার পক্ষে সম্পূর্ণ বক্তৃতা লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয় নাই। মেসার্স হায়াত ও ইসমাইল উভয়েই স্বীকার করেন যে, শেখ মুজিবর রহমান কি বক্তৃতা করিয়াছিলেন তাহা এখন আর তাঁহাদের স্মরণ নাই। এমনকি গত তারিখ তাঁহারা কোর্টে শেখ মুজিবরের বক্তৃতার যে উদ্ধৃতি দিয়াছেন তাহাও তাহাদের এখন সম্পূর্ণ মনে নাই। এই উভয় সাক্ষীই জেরার জবাবে বলেন যে, তাঁহারা। বাংলা ভালভাবে বুঝেন না। “তদন্তকারী অফিসার আপনার কোন জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করিয়াছেন কি-না” আসামীপক্ষের আইনজীবী এই প্রশ্ন করিলে সাক্ষী জনাব ইসমাইল জবাবে বলেন, “আমি কড়া বাংলা বুঝি না”। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে সাক্ষী জনাব হায়াত কোর্টকে জানান যে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের নাম জানেন না এবং তিনি সংবাদপত্র পড়েন না।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযােগ্য যে, ১৯৬৪ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর “জুলুম প্রতিরােধ দিবসে” ঢাকার আউটার স্টেডিয়ামে “আপত্তিকর বক্তৃতা দেওয়ার অভিযােগে পূর্ব পাকিস্তান জননিরাপত্তা আইনের ৭(৩) ধারা মতে এই মামলা দায়ের করা হয়। আগামী ২২শে মার্চ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য হয়।
আইনজীবী মেসার্স জহিরুদ্দীন, আবুল হােসেন, শাহ মােয়াজ্জম হােসেন, খােন্দকার মাহাবুব হােসেন, মহম্মদ উল্লা প্রমুখ আসামী পক্ষে ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব বখত সরকারপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব