আজাদ
১১ই ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬
লাহােরে সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিব
পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্ত্বশাসন কায়েমের গুরুত্ব ব্যাখ্যা
লাহাের, ১০ই ফেব্রুয়ারী।- পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবর রহমান এখানে বলেন যে, প্রদেশে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন কায়েম এবং পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য অধিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের যে প্রয়ােজন রহিয়াছে, তাহা সাম্প্রতিক পাক-ভারত যুদ্ধে প্রমাণিত হইয়াছে।
এখানে এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিবর রহমান উপরােক্ত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিগত যুদ্ধে পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে সকল প্রকার যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন হইয়া যায় এবং পূর্ব পাকিস্তানী জনগণের অকৃত্রিম ও আন্তরিক দেশপ্রেমের জন্যই সমগ্র দেশ মাতৃভূমির নিরাপত্তার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানীরা সঙ্গে সঙ্গে ইহাও বুঝিতে পারিয়াছে যে, দেশরক্ষার ব্যাপারে প্রদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করিতে হইবে।
শেখ মুজিবর রহমান বলেন যে, দেশরক্ষা ও অর্থনৈতিক বিষয়ে উভয় প্রদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার পরে দেশের সংহতি ও নিরাপত্তার প্রতি প্রদত্ত যে কোন চ্যালেঞ্জ বলিষ্ঠভাবে মােকাবেলা করা হইবে।
প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন জাতীয় সংহতির উপরে চাপ প্রদান করিবে না, বরং পাকিস্তানকে অধিক শক্তিশালী করিবে বলিয়া অওয়ামী লীগ নেতা জানান।
জনাব রহমান বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাগণ কর্তৃক পূংখানুপুংখরূপে আলােচিত না হইলে তিনি তাসখন্দ ঘােষণা সম্পর্কে কোন মন্তব্য করিতে রাজী নহেন।
এখানে অনুষ্ঠিত ৪টি বিরােধী দলের সম্মেলন সাফল্যমণ্ডিত হইয়াছে বলিয়া তিনি জানান। তিনি বলেন যে, দেশের উভয় অংশ হইতে ৭ শত ৫০ জন প্রতিনিধির এই সম্মেলনে যােগদান একটি উল্লেখজনক ঘটনা।
জাতীয় প্রেস ট্রাষ্টের সংবাদপত্র গুলি এই সম্মেলন সম্পর্কে হতাশার বাণী প্রচারের প্রচেষ্টা চালাইয়াছেন কিন্তু উহাতে কোন ফল হয় নাই বরং এই সম্মেলন বিরােধী দলের কর্মীদের মধ্যে অধিকতর ঐক্যের সৃষ্টি করিয়াছে বলিয়া শেখ মুজিবর রহমান জানান।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব