আজাদ
৫ই ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬
পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন
শেখ মুজিব কর্তৃক প্রয়ােজনীয়তা বিশ্লেষণ
ঢাকা, ৪ঠা ফেব্রুয়ারী। জনসাধারণের সত্যিকার যন্ত্রণাভাব প্রতিফলিত করার জন্য দেশে অবশ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। যুদ্ধের অভিজ্ঞতার ফলে পূৰ্ব্বকার তুলনায় অধিকতর পরিমাণে এই ধারণা বদ্ধমূল হইয়াছে যে, একমাত্র ১৯৪০ সালের লাহাের প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তনের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থার দ্বারা এবং অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও দেশরক্ষার দিক হইতে পূর্ব পাকিস্তানের স্বয়ংসম্পূর্ণতা বিধানের দ্বারাই দেশের ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা যাইতে পারে।
আজ লাহাের যাত্রার প্রাক্কালে এক বিবৃতি প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী শেখ মুজিবর রহমানও উপরােক্ত মন্তব্য প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমরা সকল জাতির সহিত বিশেষ করিয়া আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ভারতের সহিত শান্তি ও মৰ্য্যাদার সহিত বাস করিতে চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল আন্তর্জাতিক বিরােধ মীমাংসার পক্ষপাতী এবং বল প্রয়ােগের মনােভাবকে ঘৃণা করি। আমরা শান্তিপূর্ণ নীতির প্রতি সমর্থনের দৃঢ়সংকল্প লইয়া এবং শান্তিকাম্য মানবসমাজের চেষ্টায় বিশেষ করিয়া সােভিয়েট উজিরে আজম কোসিগিনের মধ্যস্থতার ফলে যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হইয়াছে তাহাকে প্রকৃষ্ট রূপে কাজে লাগানাের দৃঢ় সংকল্প লইয়া আমরা প্রস্তাবিত লাহাের সম্মেলনে যােগদানের জন্য গমন করিতেছি। উক্ত সম্মেলনে সম্পূর্ণ নিরাসক্ত মন লইয়া দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করা হইবে এবং রক্তাক্ত সংগ্রামের ভিতর দিয়া আমাদের কি লাভ-লােকসান হইয়াছে তাহার হিসাবনিকাশ করা হইবে এবং স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গী অনুসারে আমাদিগকে নূতন করিয়া যাত্রা পথ নির্ধারণ করিতে হইবে। -এপিপি
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব