You dont have javascript enabled! Please enable it!

সংবাদ
৫ই ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬

তাসখন্দ বিরােধী প্রস্তাব গৃহীত হইলে বৈঠক বর্জন করিব
(নিজস্ব বার্তা পরিবেশক)

গতকল্য শুক্রবার লাহাের সম্মেলনে যােগদানের উদ্দেশ্যে যাত্রাপথে ঢাকা বিমানবন্দরে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের নেতা শেখ মুজিবর রহমান জানান যে, “তাসখন্দ চুক্তি বিরােধী কোন প্রস্তাব গ্রহণ করা হইলে আমরা বৈঠক বর্জন করিব।” তিনি তাসখন্দ ঘােষণা বিরােধিতাকে আন্দোলনের অন্যতম সূচী হিসাবে গ্রহণ করিতেও নারাজ। আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের জনৈক সদস্য জানান যে, আওয়ামী লীগ লাহাের সম্মেলনে যােগদানের পূর্বে পশ্চিম পাকিস্তানী নেতৃবৃন্দের নিকট কতিপয় সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করিবেন। দেশের আভ্যন্তরীণ সমস্যাদি লইয়া এবং দেশের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ কতিপয় ন্যায্য দাবীতে ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন। গড়িয়া তােলার উদ্দেশ্যে তাঁহারা এই সম্মেলনে কতিপয় সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আনয়ন করিবেন।
উক্ত মুখপাত্র জানান যে, পশ্চিম পাকিস্তানের বিরােধী দলীয় নেতৃবৃন্দ সেখানকার বিশেষ এক মহলের বতর্মান তাসখন্দ ঘােষণা বিরােধী মনােভাব দ্বারা প্রভাবিত হইয়া যদি দেশের মূল সমস্যা বাদ দিয়া কেবলমাত্র তাসখন্দ ঘােষণাকে প্রত্যাখ্যান করার জন্যই এই বৈঠক আহ্বান করিয়া থাকেন, তাহা হইলে উহা কিছুতেই সফলকাম হইবে না। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তাহাদের কোন প্রকার সমর্থন যােগাইবেন না। আবেগ বিমুক্ত পরিবেশে ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত আলােচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিবর্তে লাহোের সম্মেলন যদি তাসখন্দ ঘােষণাকে প্রত্যাখ্যানের উদ্যোগ পর্ব হিসেবে ব্যবহৃত হয়…
এ, পি, পি পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, শেখ মুজিবর রহমান যাত্রার প্রাক্কালে এক বিবৃতিতে বলেন যে, আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী এবং আমরা সকল জাতি, বিশেষ করিয়া আমাদের নিকট প্রতিবেশী ভারতের সহিত শান্তিতে ও সম্মানজনকভাবে বসবাস করিতে চাই।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন যে, আমরা ৫ই ও ৬ই ফেব্রুয়ারীতে আহূত লাহোের সম্মেলনে যােগদান করিতে যাইতেছি। এই সম্মেলনে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালােচনা করা হইবে এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মােট লাভালাভ হিসাব করা হইবে।
তিনি জানান যে, আমরা শান্তি স্থাপনের দৃঢ়সংকল্প লইয়া লাহাের সম্মেলনে যােগদান করিতেছি। বিশেষ করিয়া সােভিয়েট প্রধানমন্ত্রী কোসিগিন যে মহান উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছেন আমরা উহার প্রতি সমর্থন জানাইব। ভবিষ্যতে শান্তি বিঘ্নকারী কোন প্রকার তৎপরতা যাহাতে গ্রহণ করা না হয়, তজ্জন্য আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখিব।
১৯৪০ সনের লাহাের প্রস্তাব অনুযায়ী এই প্রদেশে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি দাবী জানান।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!