You dont have javascript enabled! Please enable it! 1966.01.29 | শেখ মুজিবর রহমান এক বৎসরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত : রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার রায় প্রকাশ | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

আজাদ
২৯শে জানুয়ারী ১৯৬৬

শেখ মুজিবর রহমান এক বৎসরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত :
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার রায় প্রকাশ

ঢাকা, ২৮শে জানুয়ারী।- ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব এম, বি আলম অদ্য পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করিয়া এক বৎসরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। আওয়ামী লীগ নেতা পাকিস্তান দণ্ডবিধি আইনের ১২৪ (ক) ধারা ও পূর্ব পাকিস্তান জন-নিরাপত্তা অর্ডিন্যান্স, ১৯৫৮-এর ৭(৩) ধারা মােতাবেক দোষী সাব্যস্ত হইয়াছেন। তাহার বিরুদ্ধে আনীত দুইটি অভিযােগের প্রত্যেকটিতে তাহাকে এক বত্সর করিয়া কারাদণ্ড দেয়া হয়। সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জনসভায় প্রদত্ত রাষ্ট্রদ্রোহমূলক এক বক্তৃতার অভিযােগে শেখ মুজিবর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়। জনাব সােহরাওয়ার্দীর মৃত্যুতে দুই বৎসর পূৰ্বে আয়ােজিত এক শােকসভায় তিনি এই বক্তৃতা প্রদান করিয়াছিলেন। বিচারের রায় দানের পর শেখ মুজিবর রহমানের কৌসুলী অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন করিলে ম্যাজিষ্ট্রেট উহা না-মঞ্জুর করেন। পরে হাইকোর্টে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হইতে পারে, এইরূপ উক্তি করেন। উপরােক্ত ভাষণের ভিত্তিতে উক্ত মামলা সরকার কর্তৃক উক্ত অতিরিক্ত ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট সমীপে দায়ের করিলে জনাব মুজিবর রহমানকে উক্ত দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
গতকল্য মধ্যাহ্ন বিরতির পর জনাব মুজিবর রহমানের পক্ষ হইতে হাইকোর্টে জামিনের জন্য এক আবেদনপত্র পেশ করা হয় এবং প্রার্থনা করা হয় যে, যেহেতু জনাব মুজিবর রহমান উক্ত রায়ের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্ত হন। নাই এবং তাহা পাইতে কয়েকদিন সময় লাগিবে সেই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কারাদণ্ডের উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা পর্যন্ত জনাব মুজিবরকে জামিনে মুক্তি প্রদান করা হউক।
বিচারপতি জনাব তালুকদার আবেদনকারী জনাব মুজিবর রহমানের উক্ত প্রার্থনা মঞ্জুর করিয়া জামিনের আদেশ দিয়াছেন।
আবেদনকারীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জনাব আবদুস সালাম খান ও তাহাকে সাহায্য করেন জনাব শাহাবুদ্দিন, জনাব নূরুল হক, জনাব আবদুর রব, জনাব মােল্লা জালালুদ্দিন ও জনাব আমিনুল হক।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব