You dont have javascript enabled! Please enable it!

দৈনিক ইত্তেফাক
৪ঠা অক্টোবর ১৯৬৫

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক মানসিকতায় আওয়ামী লীগের ক্ষোভ
ওয়ার্কিং কমিটির জরুরী সভায় দেশের পরিস্থিতি বিবেচনাঃ কয়েকদফা
গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত

(স্টাফ রিপাের্টার)
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনার জন্য আহূত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির গতকল্যকার (রবিবার) জরুরী বৈঠকে দীর্ঘ আলােচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এক প্রস্তাবে পাকিস্তানের উপর ভারতের নগ্ন হামলার তীব্র নিন্দা করা হয় এবং শত্রুপক্ষের বিপুল সংখ্যাধিক্য সত্ত্বেও পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর যে-সব অকুতােভয় বীর সৈনিক যুদ্ধক্ষেত্রে অপরিসীম বীরত্ব ও অসীম সাহসের পরিচয় দিয়া এমনকি জীবনের বিনিময়েও মাতৃভূমির পবিত্রতা রক্ষা করিয়াছেন, তাহাদের প্রতি অশেষ মােবারকবাদ জানানাে হয়।
শহীদ বীরদের পারিবারিক পুনর্বাসনের আহ্বান
মাতৃভূমির অখণ্ডত্বের উপর শত্রুর হামলা রুখিতে গিয়া দেশের যেসব বীর সন্তান অসীম বীরত্বের সহিত যুদ্ধ করিতে করিতে শাহাদৎ বরণ করিয়াছে তাহাদের অসহায় পরিবারবর্গের পুনর্বসতির জন্য ওয়ার্কিং কমিটি এক প্রস্তাবে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সাহায্যকারী দেশসমূহের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ
ন্যায় ও সত্যের জন্য পাকিস্তানের আজিকার এ সংগ্রামের দিনে যেসকল দেশ ও জাতি পাকিস্তানের প্রতি সাহায্য ও সমর্থন জানাইয়াছে, এক প্রস্তাবে ওয়ার্কিং কমিটি সেইসব দেশ ও জাতির প্রতি অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জানান।
দেশবাসীর প্রতি মােবারকবাদ
মাতৃভূমির মর্যাদা রক্ষার জন্য দেশবাসী জনসাধারণ যেভাবে এক ও অভিন্ন হইয়া সাড়া দিয়াছেন, তজ্জন্য ওয়ার্কিং কমিটির অপর এক প্রস্তাবে সমগ্র দেশবাসীকে অশেষ মােবারকবাদ জানানাে হয়।
বর্তমান যুদ্ধ-বিরতি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
সাম্প্রতিক যুদ্ধ-বিরতি প্রস্তাবে জাতিসংঘের যে মানসিকতা ফুটিয়া উঠিয়াছে, কমিটি তাহাতে ক্ষোভ প্রকাশ করিয়া অভিমত প্রকাশ করেন যে, আলােচ্য প্রস্তাবটি জাতিসংঘ কাশ্মীর কমিশনের ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সালের মূল যুদ্ধ – বিরতি প্রস্তাব এবং বিগত ১৭ বৎসর যাবৎ গৃহীত নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য প্রস্তাবের পরিপন্থী। একই প্রস্তাবে কমিটি কাশ্মীরী জনসাধারণের মতামত যাচাই এর জন্য অবিলম্বে তথায় অবাধ ও নিরপেক্ষ গণভােট গ্রহণের ব্যবস্থা করিবার জন্য জাতিসংঘের প্রতি দাবী জানান।
পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক সামর্থ্য আরও বৃদ্ধির সুপারিশ
আওয়ামী লীগ কমিটির সর্বশেষ প্রস্তাবে পাকিস্তানের দেশ রক্ষা বাহিনীর বীরত্ব ও অসম সাহসিকতার গভীর প্রশংসার সাথে সাথে দেশের উভয় অংশের রক্ষাব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য সরকারের প্রতি ফলপ্রসূ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয় এবং এই অভিমত প্রকাশ করা হয় যে, পূর্ব পাকিস্তানও যাহাতে যথাযােগ্যভাবে শত্রুর চ্যালেঞ্জের মােকাবিলা করিতে সক্ষম হয়, তজ্জন্য পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক শক্তি-সামর্থ্য যে আরও বৃদ্ধি করা প্রয়ােজন এবারকার যুদ্ধের মধ্যদিয়া তাহাই বড় হইয়া প্রকাশ পাইয়াছে।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!