You dont have javascript enabled! Please enable it! 1965.09.01 | শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্সের মামলা | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক ইত্তেফাক
১লা সেপ্টেম্বর ১৯৬৫

শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্সের মামলা

(কোর্ট রিপাের্টার)
ঢাকার অন্যতম প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব এম, এ, মালিকের কোর্টে গতকাল (মঙ্গলবার) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্সের ৭(৩) ধারা অনুযায়ী আনীত মামলার মুলতবী শুনানী শুরু হয়।
প্রকাশ থাকে যে, গত বৎসরের ২৯শে সেপ্টেম্বর আউটার স্টেডিয়ামে প্রতিবাদ দিবসে আয়ােজিত এক জনসভায় শেখ মুজিবর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত বক্তৃতাকে কেন্দ্র করিয়া বর্তমান মামলা আনীত হয়।
গতকাল সরকারপক্ষের ২নং সাক্ষী প্রাদেশিক সরকারের হােম (পলিটিক্যাল) ডিপার্টমেন্টের রিপাের্টার জনাব মােজাম্মেল হককে পুনর্বার সাক্ষ্যদানের জন্য আহ্বান করা হয়। সাক্ষ্যদানকালে তিনি শেখ মুজিবর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত বক্তৃতার অংশবিশেষ আদালতকে নিজের স্মৃতি হইতে উদ্ধৃত করিয়া শােনান। তিনি আদালতে শেখ মুজিবর রহমানের বক্তৃতার বাংলা শর্টহ্যান্ড নােটের মূল কপি পেশ করেন। জেরায় তিনি বলেন যে, তিনি পুলিসের স্পেশাল ব্রাঞ্চ হইতে পূর্বদিন এই “ট্রান্সক্রিপট” লইয়া আসেন। তিনি আরও বলেন যে, উহা তিনি উক্ত বিভাগের নিকট পেশ করিয়াছিলেন।
জেরায় তিনি আরও বলেন যে, আর কোন তারিখে তিনি এইরূপ রাজনৈতিক সভায় বক্তৃতার নােট লইয়াছিলেন তাহা তাহার মনে নাই। অবশ্য তিনি এইরূপ বহু নােট লইয়াছেন বলিয়া উল্লেখ করেন। এই সভায় কে আগে এবং কে পরে বক্তৃতা করিয়াছিলেন তাহাও তিনি বলিতে পারিবেন। বলিয়া জানান।
তিনি আরও বলেন যে, এই সভার পূর্বে তিনি আর কোন রাজনৈতিক সভায় উপস্থিত ছিলেন কি-না তাহাও তাঁহার মনে নাই। খবরের কাগজে পড়া আর কোন বক্তৃতা তিনি স্মরণ করিতে পারিতেছেন না বলিয়া তিনি বলেন।
জেরায় তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি যে ট্রান্সক্রিপট দাখিল করিলেন তাহাতে হােম ডিপার্টমেন্টের কোন অফিসারের স্বাক্ষর বা অফিসের কোন সিল নাই।
জেরায় তিনি আরও স্বীকার করেন যে, কোন মূল্যবান সরকারী দলিলপত্র তাঁহার বাড়ীতে লইয়া যাওয়ার কোন ক্ষমতা না থাকিলেও পূর্বদিন তিনি এই ট্রান্সক্রিপট বাড়ী লইয়া গিয়াছিলেন। অবশ্য তিনি পূর্বদিন হইতে এই ট্রান্সক্রিপট তাঁহার কাছে থাকিলেও উহা পড়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।
কাহারও ডিকটেশন মতে এই ট্রান্সক্রিপট (শেখ মুজিবের) বক্তৃতার পরে তৈরী করার কথাও তিনি অস্বীকার করেন।
তিনি স্বীকার করেন যে, শর্টহ্যান্ড নােটের ১ এবং ৩ পৃষ্ঠায় লেখার উপর দিয়া লেখার চিহ্ন ওভার রাইটিং আছে এবং উহাতে তাহার কোন ‘ইনিশিয়াল’ নাই।
মামলার শুনানী আগামী ২৩ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবী রহিয়াছে।
সরকারপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব বখৃত এবং আসামীপক্ষ মেসার্স জহিরুদ্দীন, শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন, আবুল হােসেন এবং আফতাবুদ্দীন ভুইয়া প্রমুখ আইনজীবী মামলা পরিচালনা করেন।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক॥ দ্বিতীয় পর্ব