You dont have javascript enabled! Please enable it!

দৈনিক পাকিস্তান
৫ই জানুয়ারী ১৯৬৫

শেখ মুজিবের অভয় বাণী
প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের বিজয়ে হতাশ হওয়ার কিছুই নাই
ঢাকা, ৪ঠা জানুয়ারী (পিপিএ)

কপের অন্যতম নেতা শেখ মুজিবর রহমান অদ্য এখানে ঘােষণা করেন যে, গণতান্ত্রিক আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অদম্য সংগ্রাম অব্যাহত থাকিবে।
অদ্য এখানে এক বিবৃতি মারফত শেখ মুজিবর রহমান জনগণের উদ্দেশে এই আশ্বাসবাণী উচ্চারণ করেন যে, “শেষ পর্যন্ত জনগণেরই জয় হইবে; জনাব আইয়ুব খানের তথাকথিত বিজয়ে হতাশ হওয়ার কোন কারণ নাই।”
“জাতি দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সহিত কঠোর পরীক্ষার এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মােকাবিলা করিবে” বলিয়া শেখ সাহেব দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন।
শেখ মুজিব তাঁর বিবৃতিতে বলেন : “জাতি কৌতূহলের সহিত প্রধান নির্বাচনী কমিশনার কর্তৃক বেসরকারীভাবে ঘােষিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল শ্রবণ করিয়াছে। আমি জনসাধারণের উদ্দেশে নূতনভাবে এই আশ্বাসবাণী উচ্চারণ করিতে চাহি যে, শেষ পর্যন্ত আমাদেরই জয় হইবে; জনাব আইয়ুব খানের তথাকথিত বিজয়ে হতাশ হইয়া পড়ার কোন কারণ নাই।”
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন : “কখনই জনসাধারণের পরাজয় ঘটিতে পারে না, ইতিহাসের শিক্ষা কখনই মিথ্যা হইতে পারে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জাতি সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সহিত কঠোর পরীক্ষার এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মােকাবিলা করিবে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববাসী ভালরূপেই জানে যে, সমগ্র জাতিই জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক মাদারে মিল্লাতের পশ্চাতে একতাবদ্ধ। বিগত নির্বাচনী অভিযানকালে কপের প্রতি পাকিস্তানের সর্বত্র লক্ষ লক্ষ জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মধ্য দিয়া সন্দেহাতীতভাবে উহার সাক্ষ্য মিলিয়াছে।”
বিবৃতিতে শেখ মুজিব বলেন, “জাতি বেদনা ও বিস্ময়ের সহিত লক্ষ্য করিয়াছে, সীমাবদ্ধ ভােটাধিকারের অধীনেও ক্ষমতাসীন দল কিভাবে এই নির্বাচন পরিচালনা করিয়াছে। বস্তুতঃ ভীতি প্রদর্শন, বলপ্রয়ােগ, প্রলােভন ও নিরীহ জনসাধারণের উপর নির্দয় দমননীতি ও তাহাদের মধ্যে সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে এই নির্বাচন প্রভাবিত করা হয়।”
তিনি বলেন, “সম্মিলিত বিরােধী দলের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত গ্রেফতারী পরােয়ানা জারী ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হইয়াছে।” নির্বাচন শেষে এখন ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকগণ আরও জোরেসােরে জুলুম ও হয়রানি চালাইতেছে।
বিবৃতির উপসংহারে শেখ মুজিব বলেন, “আমি সুস্পষ্টভাবে বলিতে পারি যে, জুলুম দ্বারা জনগণের আন্দোলন দমন করা যাইবে না।”

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ দ্বিতীয় পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!