You dont have javascript enabled! Please enable it! 1965.01.07 | শেখ মুজিবের বিবৃতি- করাচী ঘটনা দুর্ভোগের সূচনামাত্র | দৈনিক পাকিস্তান - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক পাকিস্তান
৭ই জানুয়ারী ১৯৬৫

শেখ মুজিবের বিবৃতি
করাচী ঘটনা দুর্ভোগের সূচনামাত্র

ঢাকা, ৬ই জানুয়ারী (পিপিএ)। -অদ্য পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী শেখ মুজিবর রহমান গত কয়েক দিন যাবৎ করাচীর নিরপরাধ জনগণের উপর যে নৃশংস অত্যাচার করা হইতেছে তাহার তীব্র নিন্দা করেন এবং বলেন যে, ভবিষ্যতে জাতিকে যে দুর্ভোগ পােহাইতে হইবে, ইহা তার সূচনামাত্র।
অদ্য প্রদত্ত এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ নেতা অনতিবিলম্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায়, তিনি সতর্ক করিয়া দিয়া বলেন যে, এই নির্যাতনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতির জন্য সরকারকেই দায়ী হইতে হইবে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘােষিত হইবার সঙ্গে সঙ্গেই করাচী এবং দেশের অন্যান্য স্থানে বিজয় উৎসবের নামে কনভেনশন মুসলিম লীগের একদল সমর্থক যে জঘন্য কার্যকলাপ শুরু করিয়াছে, বর্তমানে উহা ভয়ের কারণ হইয়া উঠিয়াছে। দেশের সর্বত্র রাজনৈতিক কর্মী ও নেতৃবৃন্দ তাহাদের শিকারে পরিণত হইয়াছে।
তিনি আরও বলেন, করাচীর পুলিশ তথা সমগ্র প্রশাসনিক ব্যবস্থাই উক্ত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়াছে। কমপক্ষে ৮ ব্যক্তি নিহত হইয়াছে এবং বহুব্যক্তি মারাত্মক রকমে জখম হইয়াছে। বহু ঘরবাড়ী ও দোকানপাট লুণ্ঠিত হইয়াছে এবং ঐ গুলিতে অগ্নিসংযােগ করা হইয়াছে। তিনি বলেন, তাহাদের একমাত্র অপরাধ ছিল এই যে, তাহারা মাদারে মিল্লাতকে ভােট প্রদান করিয়াছিল। নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার সম্পর্কে বিবৃতিতে শেখ মুজিবর রহমান আরও বলেন যে, রাজনৈতিক নেতা ও কর্মিবৃন্দের গ্রেফতারও অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব তাজউদ্দীন আহমদের গ্রেফতার এবং দেশব্যাপী অন্যান্য বহু রাজনৈতিক কর্মীর গ্রেফতার শুধুমাত্র প্রতিশােধ লওয়া এবং দলীয় রাজনীতি বানচাল করিবার প্রচেষ্টা ব্যতীত আর কিছুই নহে।
জনাব মুজিবর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং তাহাদের জন্য প্রয়ােজনীয় ক্ষতিপূরণ দাবী করেন।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ দ্বিতীয় পর্ব