You dont have javascript enabled! Please enable it!

আজাদ
১৯শে ডিসেম্বর ১৯৬৪

মােকাবেলা সভায় যােগাযােগের জন্য মাদারে মিল্লাতের পূর্ব পাকিস্থানে আগমন
ঢাকা বিমান বন্দরে জনতার আন্তরিক সম্বর্ধনা জ্ঞাপন

(ষ্টাফ রিপাের্টার)
সম্মিলিত বিরােধী দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী গণতন্ত্রের পতাকাবাহী মােহতারেমা ফাতেমা জিন্নাহ গতকল্য শুক্রবার ঢাকা পৌছিলে তাঁহাকে বিপুল সম্বৰ্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। চারিটি বিভাগীয় সদর দফতরে মােকাবেলা সভায় যােগদান এবং বিভিন্ন নিৰ্বাচনী সভায় বক্তৃতা দানের উদ্দেশ্যে তিনি পূৰ্ব্ব পাকিস্তানে এগার দিনের সফরে আগমন করিয়াছেন। করাচী হইতে আগত মিস জিন্নাকে বহনকারী বিমানটি বেলা সােয়া একটায় ঢাকা বিমান বন্দরে আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতীক্ষারত ছাত্র-জনতা বিপুল আনন্দ ধ্বনি ও শ্লোগানের দ্বারা বিমানবন্দর মুখরিত করিয়া তােলে। “মাদারে মিল্লাত জিন্দাবাদ, “বিরােধীদল জিন্দাবাদ” স্লোগানের মধ্যে মােহতারেমা ফাতেমা বিমান হইতে বাহির হইয়া সিড়ির উপর উপস্থিত হন। ‘কপ’ নেতৃবৃন্দ তাঁহাকে সিড়ির গােড়ায় সম্বৰ্ধনা জানান এবং সম্মিলিত বিরােধী দলের পূর্ধ্ব পাকিস্তান কমিটি বর্তমান মাসের চেয়ারম্যান জনাব ফরিদ আহমদ কমিটির পক্ষ হইতে প্রথম তাঁহাকে মাল্যভূষিত করেন। ঢাকায় কয়েক ঘণ্টা অবস্থানের পর মিস জিন্নাহ গতকল্য অপরাহ্নে বিমানযােগে চট্টগ্রাম যাত্রা করেন। অদ্য শনিবার তিনি চট্টগ্রামে মােকাবেলা সভায় যােগদান করিবেন। নির্বাচন উপলক্ষে ইহা মিস জিন্নার দ্বিতীয় বার পূর্ব পাকিস্তান সফর।
শেখ মুজিবর রহমান, সাবেক কেন্দ্রীয় উজির জনাব ফজলুর রহমান, অধ্যাপক গােলাম আজম, জাতীয় পরিষদের ডেপুটী স্পীকার জনাব আবুল কাসেম, বেগম রােকেয়া আনােয়ার প্রমুখ তাহাকে সম্বর্ধনা জানাইবার জন্য বিমান বন্দরে উপস্থিত ছিলেন। মিস জিন্নাহ বিমান হইতে বাহির হইয়া হাত নাড়াইয়া উৎফুল্ল জনতাকে অভিনন্দন জানান। বিমানবন্দর হইতে তিনি সরকারী গেষ্ট হাউসে গমন করেন। শহর পর্যন্ত চারি মাইল দীর্ঘ পথের মােড়ে মােড়ে নারী-পুরুষ-ছাত্রগণ তাহাকে অভিবাদন জানায়। গেষ্ট হাউসেও এক বিরাট জনতা তাঁহাকে দেখিবার জন্য ভিড় করে। মিস জিন্নার সাথে করাচী হইতে বিরােধীদল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট জনাব হাসান শেখ ও আজাদ কাশ্মীরের সাবেক প্রেসিডেন্ট কে, এম, খুরশীদও গতকল্য ঢাকা আগমন করিয়াছেন।
গেষ্ট হাউসে সাংবাদিকগণ মাদারে মিল্লাতের সাথে সাক্ষাৎ করিলে তিনি কোন কিছু বলিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন।
মিস জিন্নার ঢাকা উপস্থিতির পর সমগ্র রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কার্যক্রম পূৰ্ব্ব পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হইয়াছে। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব গত পরশু বৃহস্পতিবার ঢাকা আসিয়াছেন। অপর একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিয়া বশির আহমদ পরশু দিন ঢাকা উপস্থিত হইয়াছেন। চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সদর দফতরে চারিটি মােকাবেলা সভায় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিগণ যােগদান করিবেন।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!