আজাদ
৭ই ডিসেম্বর ১৯৬৪
নির্বাচনী কমিশনের ভূমিকা
নিরপেক্ষ নহে বলিয়া শেখ মুজিবের অভিযােগ
ঢাকা, ৬ই ডিসেম্বর।-নির্বাচনী কমিশনের ভূমিকা সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং ইহাতে সরকারী কর্মচারীদের কোন হস্তক্ষেপ নাই-এব্যাপারে জনসাধারণের মন হইতে ভ্রান্ত ধারণা নিরসন ও তাহাদের মনে বিশ্বাস জাগ্রত করিবার জন্য পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব শেখ মুজিবর রহমান নিৰ্বাচনী কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। এক বিবৃতিতে তিনি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় যােগাযােগ উজির জনাব আবদুস সবুর খানের ঘােষণার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনী কমিশন তারিখ ঘােষণার পূর্বেই খান আবদুস সবুর তাহা ঘােষণা করিয়াছেন। ইহাতে এই ধারণার সৃষ্টি হইয়াছে যে, নির্বাচনী কমিশন সরকারের দ্বারা অনুপ্রাণিত না হইয়া থাকিলেও অন্ততঃ সরকারের সহিত মত বিনিময় করিয়াছেন। জনাব মুজিবর রহমান প্রাদেশিক গবর্ণর জনাব আবদুল মােনেম খান কর্তৃক ঘােষিত মােকাবেলা সভার তারিখের কথাও উল্লেখ করেন। পরিশেষে নির্বাচনী মামলা সংক্রান্ত বিচারের ভার বিচার বিভাগ হইতে প্রশাসন বিভাগের নিকট হস্তান্তরের তিনি তীব্র সমালােচনা করেন এবং আগের ব্যবস্থা (যাহাতে জেলা জজ ও সাবর্ডিনেট জজ দ্বারা বিচারের ব্যবস্থা ছিল) চালু করার কথা ঘােষণা করার জোর দাবী জানান। পি,পি,এ
শেখ মুজিবর রহমান বলেন যে, সম্মিলিত বিরােধী দলের বিরাট সাফল্যে ক্ষমতাসীন দল বেসামাল হইয়া পড়িয়াছে। ‘কপ’ ক্ষমতায় আসিলে মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থা ধ্বংস হইবে বলিয়া যে অভিযােগ করা হয়, তাহার জওয়াবে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পর মৌলিক গণতন্ত্রের স্বরূপ সম্বন্ধে পাঁচ দফা ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন।
এইগুলি হইতেছে, মনােনয়ন প্রথা বিলােপ, বর্তমান মৌলিক গণতন্ত্র সংস্থার ৫বৎসর মেয়াদ, মৌলিক গণতন্ত্রের নূতন নিৰ্বাচন অনুষ্ঠান না করা, ওয়ার্কস প্রােগ্রাম চালু রাখা ও মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থাকে সরকারী প্রভাবমুক্ত করা।
মৌলিক গণতন্ত্র সংস্থা পূর্বতন ইউনিয়ন বাের্ডের মর্যাদা লাভ করিবে ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সংস্থা হিসাবে কাজ করিবে। তিনি ছাত্র, কর্মী, চাষী, চিকিৎসক ও শিক্ষকদের দাবীপূরণে ব্যর্থ হওয়ার জন্য বর্তমান সরকারের মনােভাবের নিন্দা করেন।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব