ইত্তেফাক
২৩শে নভেম্বর ১৯৬৪
শেখ মুজিবের করাচী যাত্রা
(ষ্টাফ রিপাের্টার)
প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান গতকল্য (রবিবার) করাচী যাত্রা করেন। আগামী ২৬শে নবেম্বর পর্যন্ত তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থান করিবেন। প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও সিটি আওয়ামী লীগ কর্মীরা বিমানবন্দরে তাঁহাকে বিদায় সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন।
শেখ মুজিবরের করাচী উপস্থিতি
বিমান বন্দরে বিপুল সম্বর্ধনা
করাচী হইতে গভীর রাত্রে টেলিফোনযােগে প্রাপ্ত খবরে জানা গিয়াছে যে, সম্মিলিত বিরােধী দলের অন্যতম নেতা প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান ঢাকা হইতে অদ্য রাত্রে করাচী আসিয়া পৌছিলে বিমান বন্দরে হর্ষেফুল্ল এক বিরাট জনতা তাহাকে বিপুল সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করে। বিমান হইতে বাহিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে জনতার কণ্ঠ বিদারী ‘পাকিস্তান। জিন্দাবাদ’, ‘মাদারে মিল্লাত জিন্দাবাদ’, ‘শেখ মুজিবর রহমান জিন্দাবাদ’, ‘পূর্ণ গণতন্ত্র জিন্দাবাদ’ প্রভৃতি ধ্বনিতে বিমান বন্দর মুখরিত হইয়া উঠে। সম্বর্ধনা জ্ঞাপনকারী জনতার মধ্যে বহু সংখ্যক প্রবাসী বাঙ্গালীও ছিলেন। বিমান হইতে নামিবার পর শেখ সাহেবকে বিপুলভাবে মাল্যভূষিত করা হয়। বিমানবন্দরের হর্ষোৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা প্রসঙ্গে শেখ সাহেব তুমুল উল্লাস ধ্বনির মধ্যে ঘােষণা করেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে জনসাধারণ এবার একবাক্যে সম্মিলিত বিরােধী দলের ডাকে সাড়া দিয়া নির্বাচক মণ্ডলীর নির্বাচনে শতকরা ৮৫ হইতে ৯০টি আসনে বিরােধী দলীয় প্রার্থীকে জয়যুক্ত করিয়াছেন।
আওয়ামী লীগ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান করাচীতে অবস্থান কালে মােহতারেমা মিস ফাতিমা জিন্নার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া তাহার দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচনী সফরের কর্মসূচী সম্পর্কে আলােচনা করিবেন। শেখ সাহেব করাচীতে মরহুম জনাব সােহরাওয়ার্দীর বাসভবন ‘লাখাম হাউসে অবস্থান করিতেছেন।
করাচীর নেতৃবৃন্দের সহিত আলাপ-আলােচনার পর গতরাত্রে শেখ সাহেব এক বার্তায় জানাইয়াছেন যে, পশ্চিম পাকিস্তানের সাম্প্রতিক নির্বাচনে সম্মিলিত বিরােধীদল সামগ্রিকভাবে শতকরা ৭৫টি আসন লাভ করিয়াছে।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব