You dont have javascript enabled! Please enable it!

পূর্বদেশ
২২শে নভেম্বর ১৯৬৪

শেখ মুজিবের জবাব

“দেশে সামরিক আইন জারীর কিছুদিন পরেই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী জনাব মােহাম্মদ শােয়েবের নেতা (প্রেসিডেন্ট আইয়ুব) ভারতের নিকট যৌথ
৬০৪
দেশরক্ষার একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমন কি তাঁর নেতা বেরুবাড়ী ইউনিয়নে দখল কায়েম ছাড়াই বিনিময়ের নামে পাকিস্তানী এলাকা ভারতের নিকট হস্তান্তর করেছেন।”
গত ১৯শে নবেম্বর কতিপয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী জনাব মােহাম্মদ শােয়েবের অভিযােগের জওয়াবে পূৰ্ব্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব শেখ মুজিবর রহমান উপরােক্ত মন্তব্য করেন। জনাব মুজিবর রহমান বলেন, কতিপয় সংবাদ একটি ভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় এবং তার বলে কথিত এক বিবৃতির উপর জনাব শােয়েবের মন্তব্য ফলাও করে ছাপা হয়। তিনি বলেন, এখানে কোন ভারতীয় সংবাদপত্র পাওয়া যায় না বিধায় তিনি তাঁর বলে কথিত উক্ত বিবৃতি দেখার এবং তাতে কি আছে না আছে তা জানার সুযােগ পান নি।
শেখ মুজিব বলেন, বেশ কিছুদিন পূৰ্ব্বে এ, পি, এ’র প্রতিনিধিসহ কতিপয় বিদেশী সংবাদপত্রের প্রতিনিধি তার সাথে বর্তমান নির্বাচনী অভিযান সম্পর্কে আলােচনার জন্যে সাক্ষাত করেছিলেন। আলােচনা প্রসঙ্গে তিনি তাঁদের নিকট উন্নতিশীল দেশের অস্ত্র প্রতিযােগিতার ভূমিকা সম্পর্কে আলােকপাত করেছিলেন। তিনি এই অভিমত প্রকাশ করেছিলেন যে, অস্ত্র প্রতিযােগিতায় উন্নতিশীল দেশের সম্পদের অপব্যয় করা উচিত নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন যে, অস্ত্র প্রতিযােগিতা বৃহৎ শক্তির কাজ। কারণ বৃহৎ শক্তিবর্গ বিশ্বযুদ্ধের উত্তেজনা সৃষ্টি করে কিম্বা শান্তি রক্ষা করতে পারে। অতএব, পাকিস্তান ও ভারতের মত উন্নতিশীল দেশের নিজেদের মধ্যকার বিরােধীয় বিষয়গুলি মীমাংসা করে সৎ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশী হিসাবে বাস করা এবং তাদের দেশরক্ষার ব্যয় উন্নয়ন পরিকল্পনা খাতে দেয়া উচিত। ইহা উভয় দেশের জনগণের যথেষ্ট উপকারে আসবে। অথচ ভারত তা না করে বিদেশী শক্তির সাহায্যে নিজেকে ব্যাপকভাবে অস্ত্র সজ্জিত করে চলেছে এবং উহার ফলে তার আভ্যন্তরীণ অশান্তি ও সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!