আজাদ
১৮ই নভেম্বর ১৯৬৪
আজম খা কে কালাে পতাকা প্রদর্শনে ঢাকায় দারুণ ক্ষোভের সঞ্চার
গুণ্ডামির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতার কঠোর হুশিয়ারী
ঢাকা, ১৬ই নবেম্বর।-পূর্ব পাকিস্তানের প্রাক্তন গবর্ণর লেফটেনান্ট জেনারেল মােহাম্মদ আজম খান অদ্য ঢাকা হইতে লাহাের গমন করিলে বিমান বন্দরে তাহাকে কালাে পতাকা প্রদর্শন করা হয়। এই সংবাদ শ্রবণ করিয়া এখানকার বিরােধীদলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া, প্রবল ক্ষোভ ও গভীর অসন্তোষের সঞ্চার হইয়াছে।
জেনারেল আজম খান সম্মিলিত বিরােধীদলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মােহতারেমা মিস ফাতেমা জিন্নার নির্বাচনী প্রচার অভিযানের প্রধান। উদ্যোক্তা। দীর্ঘদিনব্যাপী পূর্ব পাকিস্তানের সম্মিলিত বিরােধীদলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা সমাপ্ত করিয়া তিনি আজ ঢাকা হইতে লাহাের গমন করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব শেখ মুজিবর রহমান লাহাের বিমান বন্দরের এই অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাইয়া অত্যন্ত মর্মাহত হইয়াছেন। তিনি উহাকে দুর্ভাগ্যজনক বলিয়া আখ্যায়িত করেন। জনাব মুজিবর রহমান অদ্য রাত্রে এক বিবৃতিতে বলেন যে, এই ধরনের কার্যাদি সুপরিকল্পিত ও সুসংগঠিত গুণ্ডামির নগ্ন অভিব্যক্তি ছাড়া কিছু নহে। আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন যে, দেশবাসীর কণ্ঠস্বরকে রােধ ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বের একটি আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার মতলবে এই গুণ্ডামির আশ্রয় নেওয়া হইয়াছে। প্রসঙ্গক্রমে জনাব মুজিবর রহমান এই জঘন্য গুণ্ডামির বিরুদ্ধে এক সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন যে, আমরা পূর্ণ শান্তি ও শৃংখলা রক্ষার পক্ষপাতী। সরকারী দলের দায়িত্বহীন কাৰ্যকলাপের ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হইবে, তজ্জন্য কেবলমাত্র তাহাদেরই দায়ী হইতে হইবে। জনাব মুজিবর রহমান মন্তব্য করেন যে, জনগণের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য মােহাম্মদ আজম খান সংগ্রাম করিতেছেন। এই ধরনের মর্যাদাসম্পন্ন নেতার উপর যদি গুণ্ডামি চালান হয়, তাহা হইলে জনগণ বাধ্য হইয়া বিক্ষুদ্ধ হইয়া উঠিবে। সম্মিলিত বিরােধী দলের পূর্ব পাকিস্তান কমিটির চেয়ারম্যান জনাব শাহ আজিজুর রহমানও এক পৃথক বিবৃতিতে উপরােক্ত গুণ্ডামির তীব্র নিন্দা ও কঠোর সমালােচনা করেন। তিনি বলেন যে, ইহার ফলে দেশব্যাপী প্রবল ক্ষোভ ও অসন্তোষ মাথা চাড়া দিয়া উঠিবে। তিনি বলেন যে, সরকারীদলকে এই অবাঞ্ছিত ঘটনার পরিণতি ভােগ করিতেই হইবে। —পি,পি,এ
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব