You dont have javascript enabled! Please enable it!

আজাদ
৬ই জুলাই ১৯৬৪

খওয়াজা নাজিমুদ্দিনের ঘােষণা
নির্বাচনী প্রশ্ন আলােচনার জন্য সর্বদলীয় সম্মেলন আহ্বান

(ষ্টাফ রিপাের্টার)
কাউন্সিল লীগ প্রধান খওয়াজা নাজিমুদ্দিন গতকল্য রবিবার বলেন যে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট ও মৌলিক গণতন্ত্রের নির্বাচনে সম্মিলিত প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারে আলােচনা করার জন্য ১৭ই হইতে ২০শে জুলাই এর মধ্যে বিরােধী দলের নেতৃবৃন্দ এখানে এক সম্মেলনে মিলিত হইবেন। খওয়াজা ছাহেব পক্ষকালব্যাপী পশ্চিম পাকিস্তান সফরান্তে ঢাকা আগমনের পর গতকল্য সকালে তাঁহার বাসভবনে আহূত এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপরােক্ত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, ইতিমধ্যে তিনি নেজামে এছলামের চৌধুরী মােহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগের নওয়াবজাদা নসরুল্লা খান, শেখ মুজিবুর রহমান, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির জনাব আবদুল মজিদ সিন্ধী, জনাব মাহমুদ আলী কাসুরী, জনাব মাহমুদুল হক ওসমানী, জনাব জি, এম, সৈয়দ প্রমুখ নেতার সহিত এই সম্পর্কে আলাপ-আলােচনা করিয়াছেন। তিনি বলেন যে, শীঘ্রই মওলানা ভাসানীর সহিত এ ব্যাপারে তিনি আলােচনা করিবেন। তিনি দৃঢ়তার সহিত এই আশা প্রকাশ করেন যে, সম্মিলিত বিরােধী দল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একজন উপযুক্ত প্রার্থী মনােনীত করিতে সক্ষম হইবেন।
তিনি বলেন যে, পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বৃদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক চেতনাসম্পন্ন জনসাধারণের দাবী হইতেছে, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করিয়া বিরােধী দলসমূহ ঐক্যবদ্ধ হউক। দেশ ও জাতির এই সংকটকালে একটি ‘যুক্তফ্রন্ট গঠন করা উচিত বলিয়া তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন যে, বর্তমানে পাকিস্তান এবং পাকিস্তানীদের ভবিষ্যত্ব বিপন্ন হইয়া পড়িয়াছে। খওয়াজা ছাহেব এই মর্মে আশংকা প্রকাশ করেন যে, খােদা না করুন, যদি প্রেসিডেন্টের নির্বাচনে বিরােধী দলীয় প্রার্থী পরাজিত হন, তাহা হইলে দেশে স্বাধীন সংবাদপত্রের অস্তিত্বই থাকিবে না। সংবাদ সরবরাহ এবং বিজ্ঞাপন প্রদান প্রতিষ্ঠানগুলিও সরকারের কর্তৃত্বাধীনে চলিয়া যাইবে। ফলে, উজির নাজির অফিসারগণ যাহাই করুন না কেন, কোন সংবাদপত্রে কোন অত্যাচার, অবিচারের কাহিনীই প্রকাশিত হইতে পারিবে না।
লীগ নেতা রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক বিচারপতিদের বরখাস্তের ব্যবস্থারও সমালােচনা করেন।
খওয়াজা ছাহেব ভােটার তালিকা মুদ্রনের দাবী জানাইয়া বলেন যে, অবাধ এবং মুক্ত নির্বাচনের জন্য ভােটার তালিকা মুদ্রন একান্ত প্রয়ােজন। তিনি অতঃপর মােহাজের পুনর্বাসন সমস্যার কথা উল্লেখ করিয়া বলেন যে, মােহাজেরদের পুনর্বাসনের কার্য্যকে অগ্রাধিকার দান করিয়া প্রয়ােজনবােধে এছালামাবাদে নয়া রাজধানী নির্মাণের কাজের গতি মন্থর করার সােপারেশ করেন। তিনি বলেন, রাজধানী নিৰ্মাণ অপেক্ষা মানুষের জীবন রক্ষা অনেক বেশী প্রয়ােজনীয় কাজ। নয়া বাজেটের সমালােচনা করিয়া তিনি বলেন, এই বাজেটে নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদির উপর নয়া কর ধার্য্য করার ফলে জীবন ধারণের ব্যয় শতকরা ২৫ ভাগ বৃদ্ধি পাইয়াছে। তিনি আরও বলেন যে, কোটিপতি ব্যবসায়ীদের এই বাজেটে সকল প্রকার সুযােগ সুবিধা দেওয়া হইয়াছে।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!