ইত্তেফাক
১৪ই জুন ১৯৬৪
শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
আগামী ১৩ই জুলাই শুনানির তারিখ ধার্য
(ষ্টাফ রিপাের্টার)
ঢাকার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার জনাব এম, বি, আলমের এজলাসে আগামী ১৩ই জুলাই প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানির তারিখ ধার্য হইয়াছে। প্রকাশ থাকে যে, ১৯৫৮ সালের পূর্ব পাকিস্তান জননিরাপত্তা আইনের ৭(৩) ধারা এবং পাকিস্তান দণ্ডবিধির ১২৪-ক ধারা অনুযায়ী শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলা আনীত হইয়াছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যাইতে পারে যে, গত ১৯শে মে ঢাকার পুলিস সুপার শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযােগ পেশ করেন। এই অভিযােগে বলা হয় যে, গত ১৫ই ডিসেম্বর শেখ মুজিবর রহমান পল্টন ময়দানে এক জনসভায় বাংলায় যে বক্তৃতা দেন তাহাতে আইনের বলে প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি ঘৃণা অসম্মান বা অসন্তোষ সৃষ্টির প্রয়াস বা আশঙ্কা ছিল এবং তাহাতে আইন ও শৃংখলা রক্ষার প্রশ্নে হস্তক্ষেপ বা হস্তক্ষেপে উসকানি প্রদান করা হয় ও উহা রাষ্ট্রদ্রোহাত্মক ছিল। কারণ তিনি নিম্নলিখিত কথা বলিয়া শ্রোতাদের উত্তেজিত করেনঃ “আমি জানি না, জনাব সােহরাওয়ার্দী মারা গিয়াছেন কিনা! কিন্তু আমি মনে করি, আমার নেতাকে হত্যা করা হইয়াছে। বৃদ্ধ বয়সে জেলে পুরিয়া আমার নেতাকে হত্যা করা হইয়াছে…।
আমার বাঙ্গালী ভাইরা, ঐক্যবদ্ধ হউন এবং ইহার প্রতিশােধ নিন… গ্রামে। গ্রামে ছড়াইয়া পড়ন… যাহারা আমাদের নেতাকে হত্যা করিয়াছে তাহাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিশােধ গ্রহণ করিতে হইবে… হায় বাঙ্গালী। ঐক্যবদ্ধ হইয়া আমার নেতার মৃত্যুর প্রতিশােধ না লইলে আমি আপনাদের বিশ্বাসঘাতক ও অকৃতজ্ঞ বলিব। অত্যাচারীদের হাত হইতে জনসাধারণের হাতে আবার ক্ষমতা ফিরিয়া আসিলে তাহার বিচার করা হইবে।” উপরােক্ত বক্তৃতার দ্বারা পূর্বোক্ত অপরাধ অনুষ্ঠিত হইয়াছে বলিয়া অভিযােগে বলা হয়। এডভােকেট শাহ আজিজুর রহমান এবং জনাব জহিরুদ্দীন এই মামলায় শেখ মুজিবের পক্ষ সমর্থন করিতেছেন।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব