ইত্তেফাক
৮ই মে ১৯৬৪
সােহরাওয়ার্দীর আদর্শে অনুপ্রাণিত
আওয়ামী লীগ গণমুক্তির জন্য সংগ্রাম করিতে বদ্ধপরিকর
চাপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত বিরাট জনসমাবেশে আওয়ামী নেতৃবৃন্দের বক্তৃতা
(ইত্তেফাকের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি)
চাপাইনবাবগঞ্জ, ৭ই মে- গতকল্য স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে এক অভূতপূর্ব জনসমাবেশে আওয়ামী লীগ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান ঘােষণা করেন যে, মরহুম জননায়ক জনাব হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী আওয়ামী লীগকে একটি সুষ্ঠু ও সুসংবদ্ধ পরিবার হিসাবে গঠন করিয়া গিয়াছেন। তিনি বলেন যে, মরহুম নেতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া আওয়ামী লীগ জনসাধারণের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করিতে বদ্ধপরিকর। শেখ মুজিবর রহমান বলেন যে, আওয়ামী লীগ একটি সুসংহত সংস্থা, জনসেবায় নিবেদিত প্রাণ নিঃস্বার্থ কর্মী লইয়াই এই প্রতিষ্ঠান গঠিত। আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন যে, চট্টগ্রামের কোন আওয়ামী লীগ কর্মীর উপর নির্যাতন হইলে চাপাইনবাবগঞ্জের কর্মীরা কষ্ট অনুভব করেন। তাই তাঁহারা প্রতিবাদ মুখর হইয়া উঠেন। তিনি প্রত্যেক ইউনিয়ন হইতে ৫ জন নিঃস্বার্থ কর্মী সংগ্রহ করার আহ্বান জানাইয়া বলেন যে, অনুরূপ সংখ্যক কর্মী পাইলে কায়েমী স্বার্থবাদীদের নিকট হইতে জনগণের অধিকার আদায় করা মােটেই কষ্টসাধ্য হইবে না। শেখ মুজিবর রহমান ওয়ার্কস গ্রোগ্রামের ন্যায় অনুৎপাদনশীল কাজে কোটি কোটি টাকা ব্যয়কে জনগণের অর্থ লইয়া ছিনিমিনি খেলা বলিয়া আখ্যায়িত করেন।
মওলানা তর্কবাগীশ
সভায় বিপুল করতালির মধ্যে বক্তৃতা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণবিরােধী চক্রের জুলুমের মােকাবিলা করার আহবান জানান।
তিনি বলেন যে, সম্প্রতি প্রদেশে অত্যাচারের যে ষ্টিম রােলার চালান হইতেছে উহাতে যাহারা নির্যাতন ভােগ করিতেছেন উহা কখনও বৃথা যাইবে না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মহকুমা আওয়ামী লীগ সভাপতি জনাব রইস উদ্দিন আহমদ। খন্দকার মােশতাক আহমদ এবং জনাব মতিউর রহমানও সভায় বক্তৃতা করেন। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে সকল রাজবন্দীর মুক্তি, শাসনতন্ত্রের দ্বিতীয় সংশােধনী বিল প্রত্যাহারের দাবী করা হয়।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব