You dont have javascript enabled! Please enable it!

আজাদ
১৯শে এপ্রিল ১৯৬৪

সরকারের দমননীতির সমালােচনা
বরিশালের জনসভায় শেখ মুজিবর রহমানের বক্তৃতা

(সংবাদদাতা প্রেরিত)
বরিশাল, ১৭ই এপ্রিল। প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজ এখানে বর্তমান সরকারের দমননীতি, নির্যাতন, ভােটাধিকার হরণ ও ব্যাপক ধরপাকড় নীতির তীব্র সমালােচনা করেন।
তিনি বলেন, সামরিক শাসনামলে আমলাতন্ত্র ও পুজিবাদীরাই চরম বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়াছে।
বরিশাল টাউন হল ময়দানে এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে শেখ মুজিবর রহমান উপরােক্ত মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, শেরে বাংলা, সােহরওয়ার্দী ও নজরুল ইসলামের বাংলায় বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরেরও অভাব নাই। তিনি দেশবাসীর প্রতি এই সকল মীরজাফরের বিরুদ্ধে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। বিশ্বাসঘাতকদের নামের তালিকা প্রদান করা হইতেছে বলিয়াও তিনি উল্লেখ করেন। শেখ মুজিবর রহমান বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানীদিগকে রাষ্ট্রের ৫টি প্রধান অঙ্গ- রাজধানী, কেন্দ্রীয় শাসন, দেশরক্ষা, পুজি গঠন এবং রাজনৈতিক শক্তি হইতে বঞ্চিত করার জন্যই সামরিক শাসন প্রবর্তন করা হয়। তিনি শাসনতন্ত্রের সমালােচনা করেন এবং বলেন যে, বর্তমানে শাসন বিভাগ যুগপৎ দেশের বিপদ, দুঃখ ও তার স্বরূপ হইয়া পড়িয়াছে। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব দেশের পক্ষে বােঝা স্বরূপ, তাহার উজিরগণ বিপদ এবং গবর্ণর দুঃখের কারণ হইয়া দাঁড়াইয়াছে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা দেশের নিদারুণ অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং ইহার শােচনীয় পরিণতির বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলেন, যখন দেশের পূর্বাঞ্চল গুরুতর প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকারে পরিণত হইয়াছে, কেন্দ্রীয় সরকার তখন বিলাস বহুল রাজধানী নির্মাণে ব্যাপৃত রহিয়াছে।
তিনি দেশবাসীর প্রতি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যােগদানের জন্য দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। পূর্বাহ্নে বরিশালের এই সভায় বক্তৃতার উদ্দেশ্যে জনাব শেখ মুজিবর রহমান, জনাব জহুর আহমদ চৌধুরী এবং জনাব আবদুল মালেক এম, পি, এ, সমভিব্যাহারে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৮ ঘণ্টা পরে এখানে আগমন করিলে জনসাধারণ তাহাদিগকে বিপুল সম্বৰ্ধনা জ্ঞাপন করে। আওয়ামী নেতাগণ আগামীকল্য গােপালগঞ্জ যাত্রা করিবেন।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!