You dont have javascript enabled! Please enable it! 1964.04.11 | তিনটি জনপ্রিয় সংবাদপত্রের উপর সরকারের কোপদৃষ্টি পড়িয়াছে | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

আজাদ
১১ই এপ্রিল ১৯৬৪

জনমতের কণ্ঠরােধের উদ্দেশ্যেই
তিনটি জনপ্রিয় সংবাদপত্রের উপর সরকারের কোপদৃষ্টি পড়িয়াছে
চট্টগ্রামে লক্ষাধিক লােকের সভায় নেতৃবৃন্দের বক্তৃতা

(নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত)
চট্টগ্রাম, ১০ই এপ্রিল। -আজ অপরাহ্নে স্থানীয় ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত লক্ষাধিক লােকের এক বিরাট জনসভায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং জনগণের অধিকার ও প্রত্যক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য প্রদেশব্যাপী দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তােলার শপথ গ্রহণ করা হয়।
আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত উক্ত বিরাট জনসভায় জনাব মােজাফফর আহমদ সভাপতিত্ব করেন। উহাতে প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী শেখ মুজিবর রহমান, পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী জনাব জহীরুদ্দীন, খন্দকার মুশতাক আহমদ, খাজা আহমদ, হাবিবুর রহমান, মতিউর রহমান ও জনাব আবদুল মালেক এম,পি, এ বক্তৃতা করেন।
সভায় সকল বক্তাই সংবাদপত্রের কণ্ঠরােধ, সংবাদপত্রের উপর নির্যাতন এবং জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক আজাদ, ইত্তেফাক ও সংবাদ-এর উপর জামানত তলবের শাে-কজ নােটিশ জারীর তীব্র প্রতিবাদ করিয়া বক্তৃতা দান করেন। বক্তাবৃন্দ প্রকৃত গণতন্ত্র ও সার্বজনীন ভােটাধিকারের দাবী আদায়ের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম পরিচালনার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। বিরাট জনসমুদ্রের উদ্দেশে শেখ মুজিবর রহমান মুহুর্মুহু করতালি ও হর্ষধ্বনির মধ্যে সকলকে গণবিরােধী ও গণতন্ত্র বিরােধী শক্তির তৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার উপদেশ দেন।
তিনি বলেন, এই গণবিরােধী চক্র জনমতের কণ্ঠরােধ করার জন্য সংবাদপত্রসমূহের স্বাধীনতা হরণের তৎপরতায় মাতিয়া উঠিয়াছে। সরকারের নিপীড়নমূলক নীতির তীব্র সমালােচনা করিয়া শেখ মুজিবর রহমান বলেন যে, সরকারের বর্তমান নীতি শুধুমাত্র গণ-বিরােধী ও গণতন্ত্রের পরিপন্থী নহে বরং দেশের সংহতি ও স্বার্থেরও পরিপন্থী।
আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন যে, জনজীবনের সকল স্তরে বর্তমানে নির্যাতন চলিতেছে। সর্বত্র সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হইয়াছে। তিনি বলেন, জনগণই পাকিস্তান কায়েম করিয়াছে এবং তাহারা দেশের প্রকৃত রক্ষক।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়, সেহেতু সরকার সংবাদপত্রসমূহের টুটি চাপিয়া ধরার জন্য বদ্ধপরিকর হইয়াছেন।
তিনি বলেন, যেহেতু ‘আজাদ’, ‘ইত্তেফাক’ ও ‘সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং উহার মাধ্যমেই জনগণের অধিকার আদায়ের বজ্রকঠিন শপথের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়া উঠে। সেই কারণেই সরকারের দৃষ্টি উহাদের উপর পড়িয়াছে। ..

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব