পূর্বদেশ
২৬শে জানুয়ারি ১৯৬৪
প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত
(পূর্বদেশের প্রতিনিধি)
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গতকাল (শনিবার) পুনরুজ্জীবন করা হয়েছে। সাবেক প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির এক বর্ধিত সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উক্ত সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রতি “নিম্নতম কর্মসূচীর ভিত্তিতে পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে বলা হয় যে, “পূর্ণ গণতন্ত্র ও জনসাধারণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যেই উক্ত সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
শেখ মুজিবর রহমানের ধানমণ্ডীস্থ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই সভায় মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীস সভাপতিত্ব করেন। প্রকাশ, সভায় উক্ত লীগের ওয়ার্কিং কমিটির একত্রিশজন সদস্যের মধ্যে তেইশজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া প্রদেশের সতেরটি জেলার ষােলটির আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সেক্রেটারী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক পাঁচজন জাতীয় পরিষদ সদস্য ও কিছু সংখ্যক এম,পি,এ এই সভায় অংশ গ্রহণ করেন বলে দাবী করা হয়।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে প্রধান নেতা জনাব আতাউর রহমান খান, এবং জনাব আবুল মনসুর আহমদ, জনাব আবদুল জব্বার খদ্দর প্রমুখ নেতাগণ পার্টির পুনরুজ্জীবনের বিরােধী বলে এই সভায় যােগদান থেকে বিরত থাকেন।
দু’দিনের জন্যে আহূত সভা গতকাল বিকেল আড়াইটায় আরম্ভ এবং আজ সকাল নটা পর্যন্ত মূলতবী করা হয়। পার্টি পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে সভায় দীর্ঘ চার ঘণ্টা আলােচনা চলে। সিলেট জেলার প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারী এই সভায় যােগদান করেন নি। তবে তারযােগে সভার সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপনের কথা জানিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানানাে হয়। ময়মনসিংহ জেলার প্রতিনিধিগণ সভায় প্রকাশ করেন যে, উক্ত জেলায় আওয়ামী লীগ পুণর্গঠনের কাজ বর্তমান অবস্থায় অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। প্রকাশ, পার্টি পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে ওয়ার্কিং কমিটির এই বর্ধিত সভায় কোন উপস্থিত সদস্য বিরােধিতা করেন নি।
তবে মূল আওয়ামী লীগের একটি বিশেষ শক্তিশালী দল পুনরুজ্জীবিত দলের বাইরে থেকে যাচ্ছে এবং এই দলটি পরিচালিত হবে প্রধানতঃ আওয়ামী লীগ দলীয় প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান কর্তৃক ।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব