সংবাদ
৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৬৩
পাকিস্তানের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত প্রতিবাদ-মুখর হইয়া উঠিয়াছে
অবিলম্বে সংবাদপত্র আইন অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহার কর
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দসহ সকল মহলের নিন্দা ও বিশ্ব জনমতের নিকট আবেদন
বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী শােষকগােষ্ঠীর শাসনকালেও এদেশে অন্যায় ও অত্যাচারের বহু ইতিহাস লিপিবদ্ধ হইয়াছে। হীনতম দমন নীতির খড়গ নামিয়া আসিয়াছে দেশবাসীর উপর; কিন্তু পাকিস্তানের উভয় অংশের সংবাদপত্র ও প্রকাশনা সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্সের ১৯৬৩ সালের সংশােধনী অর্ডিন্যান্স অতীতের বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসকচক্রের সকল কলঙ্কজনক ইতিহাসকেও ম্লান করিয়া দিয়া কালিমা লেপন করিয়াছে গণতন্ত্রের মুখে। তাই সমগ্র দেশব্যাপী উঠিয়াছে প্রতিবাদের ঝড়।
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ, জাতীয় পরিষদে বিরােধী দলীয় পাক পিপলস গ্রুপ, সকল প্রান্তের সাংবাদিক, ছাপাখানা কর্মচারী, ছাত্র, যুবক তথা দেশের আপামর জনসাধারণ এই অগণতান্ত্রিক কালা অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-গর্জনে ফুটিয়া উঠিয়াছে। সকল মহল গর্জিয়া উঠিয়াছে সংবাদপত্র তথা স্বাধীন জনমত ব্যক্ত করার অধিকারের কণ্ঠরােধকারী এই উদ্দেশ্যমূলক সরকারী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। তাহারা ক্ষোভ ও অসন্তোষ ভরা মনে নিন্দা করিয়াছে এই ঘৃণ্য অপচেষ্টার। আর বলিষ্ঠ কণ্ঠে দাবী জানাইয়াছে প্রত্যাহারের।
শেখ মুজিবর রহমান
ঢাকা, ৪ঠা সেপ্টেম্বর (পি,পি,এ)।- অধুনালুপ্ত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান অদ্য এক বিবৃতিতে বলেন যে, সংবাদপত্র ও প্রকাশনা সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স সংশােধন করিয়া প্রবর্তিত অর্ডিন্যান্স প্রকাশনা বিশেষ করিয়া রাজনীতি ও সংবাদপত্র প্রকাশনার ক্ষেত্রে জনসাধারণের অধিকারের অবশিষ্টাংশটুকুর প্রতি গুরুতর আঘাত হানিয়াছে। তিনি বলেন, “সংবাদপত্রের কণ্ঠরােধ ও দেশের রাজনৈতিক কাৰ্য কলাপ খর্ব করার জন্য ইহা নিঃসন্দেহে একটি প্রত্যক্ষ কর্মপন্থা।” জনাব মুজিব বলেন, “স্মরণকালের মধ্যে বৃটিশ শাসনকালেও এই ঔপনিবেশিক শক্তি ঘৃণ্যতম অত্যাচারমূলক নীতি বা কর্মপন্থা গ্রহণ করিয়া মৌল অধিকার ব্লাকসেল করার কোন কর্মপন্থা গ্রহণ করে নাই।”
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব