সংবাদ
২৪শে জুন ১৯৬১
শেখ মুজিবের আপীল আবেদনের শুনানী
ঢাকা, ২২শে জুন (এ,পি,পি)। বিচারপতি আসির ও বিচারপতি আলীকে লইয়া গঠিত ঢাকা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অদ্য পুনরায় প্রাক্তন প্রাদেশিক মন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী আবু নাসেরের আপীলের শুনানী শুরু করেন। ঢাকার স্পেশাল জজ কর্তৃক যথাক্রমে দুর্নীতি ও দুষ্কর্মে সহায়তা দানের অভিযােগে অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী ও কাজী আবু নাসেরকে দণ্ডিত করা হয়।
জনাব এইচ, এস, সােহরাওয়ার্দী শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে আদালতে বলেন যে, কোন মন্ত্রী তাঁহার সরকারী ক্ষমতাবলে মতানৈক্যের ক্ষেত্রে দফতরের সেক্রেটারীর সিদ্ধান্ত পাল্টাইতে পারেন। জনাব সােহরাওয়ার্দী ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতিদ্বয়ের নিকট বলেন যে, শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযােগ হইতেছে এই যে, তিনি দফতর সেক্রেটারীর সুপারিশের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কোন মন্ত্রী তাঁহার সেক্রেটারীর নির্দেশ মানিয়া লইতে বাধ্য নহেন বলিয়াও জনাব সােহরাওয়ার্দী উল্লেখ করেন। বিচারপতি আসির বলেন ঃ কোন মন্ত্রী তাঁহার দফতর সেক্রেটারীর নির্দেশ অমান্য করিতে পারেন কিনা, তাহা ভাবিয়া দেখিতে হইবে। জনাব সােহরাওয়ার্দী ও হাঁ, মন্ত্রী সৰ্ব্বদা সেক্রেটারীর নির্দেশ প্রত্যাখান করিতে পারেন। স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব আজিজুদ্দিন আহমদ বলেন, আমি জনাব সােহরাওয়ার্দীকে বাতিল শাসনতন্ত্রের সংশ্লিষ্ট ধারাটি উল্লেখ করিতে বলিতেছি। জনাব সােহরাওয়ার্দী ঃ কোন্ ধারাবলে মন্ত্রী সেক্রেটারীর নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করিতে পারেন না, আমি জনাব আজিজুদ্দিনকে উক্ত ধারা দেখাইতে বলিব। বিচারপতি আলী ও মন্ত্রী ও সেক্রেটারীর মধ্যে কে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন, তাহা দেখিতে হইবে। জনাব সােহরাওয়ার্দী বলেন যে, কেবল দফতর সেক্রেটারীর নির্দেশ অমান্য করার ফলে কোন মন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। অদ্য পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী দুইটি অধিবেশনে আদালতের শুনানী হয়। জনাব সােহরাওয়ার্দী ও জনাব হুমায়ুন কবীর চৌধুরী জনাব মুজিবুর রহমান এবং জনাব আবদুস সালাম খান ও জনাব সিরাজুল হক কাজী আবু নাসেরের পক্ষ সমর্থন করেন। জনাব আজিজুদ্দিন আহমেদ ও জনাব আবদুল ওদুদ মল্লিক সরকার পক্ষ সমর্থন করেন। সােমবার পুনরায় মামলার শুনানী শুরু হইবে।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব