You dont have javascript enabled! Please enable it!

সংবাদ
২৩শে আগস্ট ১৯৬০

শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আনীত মামলার শুনানী শুরু
সরকার পক্ষের দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ

ঢাকা, ২২শে আগষ্ট (এ,পি,পি)-অদ্য এখানে জেলা ও দায়রা জজ এবং পদাধিকার বলে স্পেশাল জজ জনাব এ, মওদুদের আদালতে প্রাক্তন প্রাদেশিক মন্ত্রী জনাব শেখ মুজিবর রহমান ও কাজী আবু নসরের বিরুদ্ধে যথাক্রমে আনীত অসদাচরণ ও উহাতে সহায়তা করার অভিযােগের মামলার শুনানী শুরু হয়।
অদ্য নবাবজাদা হাসান আলিসহ সরকার পক্ষের দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
অভিযােগের বিবরণে প্রকাশ, শেখ মুজিবর রহমান সরকারী কর্মচারী হিসাবে তাহার পদমর্যাদার অপব্যবহার এবং আসামী কাজী আবু নসর ও অপর কয়েক ব্যক্তির জন্য আর্থিক সুবিধা লাভ করিয়া অসদাচরণ অপরাধে অভিযুক্ত হন; আসামী কাজী আবু নসরকে উক্ত অপরাধ অনুষ্ঠানে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ১৯৫৫ সনের ১৮ই মার্চ ঢাকার মেসার্স হাসান আহমদ এণ্ড কোম্পানীকে ভারত হইতে প্রতি মাসে তিন হাজার টন সফট কোক সংগ্রহের জন্য এজেন্ট নিয়ােগ করা হয়। উক্ত ফার্ম সরকারের সহিত কমিশন ভিত্তিতে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। প্রাদেশিক বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্প দফতরের মন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমান বিভাগীয় সেক্রেটারীর আপত্তি অগ্রাহ্য করিয়া উক্ত এজেন্সি বাতিল করেন এবং কোন টেণ্ডার গ্রহণ না করিয়াই নারায়ণগঞ্জের মেসার্স কোল মাইনিং এণ্ড ট্রেডিং কোম্পানীকে ভারত হইতে সফট কোক আনয়নের জন্য নিয়ােগ করেন।
তাহার বিরুদ্ধে আনীত অপর অভিযােগ এই যে, ১৯৫৭ সনের ৭ই এপ্রিল শক্ত কয়লা সফট কোকে পরিণত করার উদ্দেশ্যে দর্শনায় একটি নয়া কারখানা স্থাপন কল্পে মেসার্স কোল মাইনিং এণ্ড ট্রেডিং কোম্পানীকে অনুমতি দান করিয়া নির্দেশ জারি করেন, অথচ উক্ত ফাৰ্ম্ম নির্ধারিত ফরমে কোন দরখাস্ত দাখিল করে নাই।
সরকার পক্ষের সাক্ষী হাসান আহমদ এণ্ড কোম্পানীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর নবাবজাদা হাসান আলী আদালতে বলেন যে, তিনি আসামী কাজী আবু নসরকে ১৯৫৫ সন হ’তে চিনেন। এজেন্সী লাভের পর আসামী নবাবজাদার সহিত সাক্ষাৎ করে ও বলে যে, সে পরিচালনা সংক্রান্ত কাৰ্য্য করিবে ও কমিশন ভাগাভাগি করিতে হইবে। নবাবজাদা ইহাতে আপত্তি জ্ঞাপন করেন। মােট ৬৫ হাজার টন কয়লা আমদানী করা হয় বলিয়াও জনাব হাসান আলী প্রকাশ করেন।
নিম্নমানের কয়লা আনয়ন সম্পর্কে উক্ত ফার্মের বিরুদ্ধে কোন অভিযােগ করা হইয়াছে কি-না, জিজ্ঞাসা করা হইলে জনাব আলী উহা স্বীকার করেন। আদালত দুর্নীতি দমন বিভাগের সেকশন অফিসার জনাব রহিম বখশেরও সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আগামীকল্য পুনরায় মামলার শুনানী শুরু হইবে।

সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!