৩০ মার্চ ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ—সিলেট
সিলেটে পাকিস্তানী ৩১ পাঞ্জাবের মিশ্র ইপিআর উইং ঘিরে ফেলে গোলাগুলি শুরু করে সেখানে বাঙ্গালী ইপিআর হাবিলদার মুজিবর ও শরাফত নিহত হয়। ৬০-৭০ জন বাঙ্গালী ইপিআর উইং থেকে বের হয়ে জাফলং চা বাগানে অবস্থান নেন। এদের নেতৃত্ব দেন হাবিলদার ওয়াহিদুল ইসলাম। জাফলং চা বাগানের ম্যানেজার কায়েস চৌধুরী এদের আশ্রয় দেন। শ্রীমঙ্গলের ইপিআর রা একেবারে অগোছালো ছিল। বিওপি এর ইপিআর রা বিদ্রোহ করে রাজনৈতিক নেতাদের সংস্পর্শে আসার পর সিআর দত্ত তাদের একত্রিত করেন। শমশের নগর এয়ারপোর্টে কিছু ইপিআর ছিল। তাদের উপর হামলা করতে ৩১ পাঞ্জাবের একটি দল শমশের নগর ২৪ তারিখেই শমশের নগর আসে। এর পরদিন খালেদ মোশাররফ তার বাহিনী নিয়ে সেখানে ক্যাম্প করেছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাবার পর সেই পাক প্লাটুনটি শমশের নগর এবং শ্রীমঙ্গলে অত্যাচার শুরু করে। খালেদের শমশের নগর অবস্থান এবং চলে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে সিআর দত্ত তাকে আটকানোর জন্য মিরপুরে লোকজন পাঠায় কিন্তু খালেদ এর আগেই মিরপুর ত্যাগ করেন। মেজর (অব) সি আর দত্ত এর কম্যান্ডে ইপিআর এর বাঙালি সৈনিকদের একটি দল শ্রীমঙ্গল আক্রমনে এগিয়ে যায়। পাকিস্তানী ইপিআর গন নয়নপুর চা বাগানে অবস্থানরত ৩১ পাঞ্জাবের একটি প্লাটুনের সাথে যোগ দেয়। এর আগে মৌলভীবাজার থেকে পাক ৩১ পাঞ্জাবের প্লাটুনটি তাদের অবস্থান নয়নপুর চা বাগানে নিয়ে আসে। দুপুরে বাঙ্গালী ইপিআর গ্রুপ তাদের উপর আক্রমন করে। সিআর দত্ত আরেকটি দল নিয়ে মৌলভি বাজার যান। সেখানে কোন পাকিস্তানী অবস্থান না থাকায় সার্কিট হাউজে ক্যাম্প গড়েন। বিকেলে নয়নপুর চা বাগান বিজয়ী দলটি মৌলভি বাজার এসে যোগ দেয়। মানিক চৌধুরীর রশিদপুর ক্যাম্পটি মৌলভি বাজার সরিয়ে আনা হয়। জেনারেল রব এই দলের সংযোগ স্থাপন করেন। এখানকার পরাজিত পাক বাহিনীর অবস্থান নির্ণয়ে করতে না পাড়ায় সিআর দত্ত ইপিআর বাহিনী নিয়ে শেরপুর-সাদিপুর ধরে সিলেট আক্রমনের পরিকল্পনা করেন।