২৯ মার্চ ১৯৭১ঃ বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ—দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চল
ফরিদপুর
ফরিদপুরে জেলা প্রতিরোধ ও সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আছেন কে এম ওবায়দুর এমএনএ, ইমাম উদ্দিন, আদেল উদ্দিন এমএনএ (পরে পাকিস্তানের পক্ষে আনুগত্য দেখান) শামসুদ্দিন মোল্লা এমএনএ, হায়দার হোসেন, গৌরচন্দ্র বালা, মোশাররফ হোসেন, নুরুননবী, কাজী খলিলুর রহমান, মুজিবুর রহমান খান, ফিরোজার রহমান, আমিন উদ্দিন, মোখলেসুর রহমান প্রমুখ স্থানীয় জননেতা এবং ছাত্রনেতাদের মধ্য থেকে ছিলেন শাহ আবু জাফর, নাসির উদ্দিন মুসা, কবিরুল আলম, সালাহ উদ্দিন, আবু সাইদ, আতিয়ার রহমান। এসময় ফরিদপুরের ডিসি ছিলেন এএনএম ইউসুফ, এসপি ছিলেন নুরুল মোমেন উভয়েই স্বাধীনতা কামীদের সহায়তা করার জন্য এপ্রিলে গ্রেফতার হন।
খুলনা
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা সীমান্তে খবর সাতক্ষীরা আদালত ভবন থেকে ক্রুদ্ধ জনতা পাকিস্তানী পতাকা নামিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। সাতক্ষীরা পাঞ্জাবী মহকুমা প্রশাসককে জনতা স্বগৃহে অন্তরীণ করে রেখেছে।
নোটঃ পরে তাকে ভারতে চালান দেয়া হয় যুদ্ধবন্দীদের সাথে ৭৩ এর শেষে বা ৭৪ এ মুক্তি পান।
চুয়াডাঙ্গা
ইপিআর এর ক্যাপ্টেন এ আর আজম অস্র ও আশ্রয়ের সাহায্য চেয়ে নদীয়ার জেলা প্রশাসকের কাছে ২৬ মার্চ পরবর্তী পত্র লিখেছিলেন। ভারত থেকে সাড়া পাওয়ার পর তাকে বেতাই ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়া হয়। ২৯ তারিখে নদীয়ার জেলা শাসক এবং বিএসএফ এর কর্নেল চক্রবর্তী এ আর আজমকে বেতাই ক্যাম্পে অভ্যর্থনা জানান( প্রথম ক্যাম্প)। এখানে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন ওসমানের সাথে তার যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
যশোর
১০৭ ব্রিগেড অধিনায়ক দুররানি তাদের চৌগাছা থেকে ফিরে আসতে বলায় ক্যাপ্টেন হাফিজ রাত ১২ টায় ফিরে আসেন। এখানে সিও লেঃকঃ জলিল বাঙ্গালীদের পক্ষে বিদ্রোহ ও যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেন। ১ বেঙ্গলের সৈনিকরা এ ফিরে এলে সেখানে অবস্থানরত ১ ফিল্ড এম্বুলেন্স এর সৈনিকরা ১ বেঙ্গলের সৈনিকদের অস্র জমা না দেয়ার আহবান জানান। কিন্তু সৈনিকরা অস্র জমা দিয়ে বিশ্রামে চলে যায়। এ রাতেই এদের প্রায় সকলকেই হত্যা করা হয়। এখানে ক্যাপ্টেন হাফিজ ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ড নিজে নিয়ে অস্রাগার লুট করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। তাকে তিন দিক দিয়ে ২৫ বালুচ এবং ২২ ফ্রন্টিয়ার ঘিরে ফেলে। যুদ্ধে তার বাহিনীর ৪০ জন শহীদ হয় এদের মধ্যে প্রথম শহীদ বীর বিক্রম লেঃ আনোয়ার আছেন। এখানে পাকিস্তানী বাহিনী বাঙ্গালী সৈনিকদের পরিবারের সদস্যদেরও হত্যা করে। আগে সেখানে তারা ফিল্ড এম্বুলেন্স এর সিও লেঃ কঃ আব্দুল হাইকে ও ক্যাপ্টেন কামালকেও হত্যা করে। যুদ্ধে হাফিজের দল প্রানহানি এড়াতে পশ্চাদপসরণ করেন।
ক্যাপ্টেন হালিমের একটি দল নড়াইল পৌঁছে জানতে পারেন যশোরে যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে তিনি তার ইউনিট নিয়ে যশোর রওয়ানা দেন। পথে হামিদপুরে পাক বাহিনীর এম্বুশে পড়েন। তার ইউনিটের সাথে স্থানীয় সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা যশোরের দিকে ফিরে যায়।
কুষ্টিয়া
ইপিআর এর মেজর ওসমান বিদ্রোহ করে স্থানীয় এমপিএদের নিয়ে তার বাহিনী পুনর্গঠন করেন। যুদ্ধে তার পরিবার তার সাথেই থাকতো। কুষ্টিয়ায় এ সময় ২০০ সদস্য এর ২৭ বালুচ অবস্থান করছিল। মেজর ওসমানের বাহিনী তাদের আক্রমনের সিদ্ধান্ত নেয়। এদিন আক্রমনের তারিখ ছিল কিন্তু তার একটি ইউনিটের গাড়ী দুর্ঘটনায় পড়লেতা ৩০ তারিখ পিছিয়ে নেয়া হয়।