২৯ মার্চ ১৯৭১ঃ ২ ইস্ট বেঙ্গল পুনর্গঠন
জয়দেবপুর/গাজীপুর
পাকিস্তানী বিমানবাহিনী ২ ব্যাটেলিয়ন সদরে বিমান হামলা চালায় এবং পরে সেনাবাহিনী ঘেরাও করে। ৮ বালুচকে নিয়ে ব্রিগেডিয়ার আরবাব এবং ব্রিগেডিয়ার হাসান অপারেশন পরিচালনা করেন। মাইকে পাক বাহিনীর হেফাজতে থাকা ব্রিগেডিয়ার এম আর মজুমদারকে দিয়ে ২ বেঙ্গল সৈন্যদের আত্মসমর্পণের আহবান জানানো হয়।
ময়মনসিংহ
সকালে মুক্তাগাছা থেকে ২ বেঙ্গলের দুই কোম্পানির দলটি ময়মনসিংহ রওয়ানা দেন। বিকেল ৪টার মধ্যে ময়মনসিংহে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল ব্যাটালিয়নের সমাবেশের কাজ সম্পন্ন হয় কিন্তু রাজেন্দ্রপুরের প্লাটুনটি পৌঁছে রাত্রে। এ প্লাটুনটি সেখানকার অস্র কারখানায় নিয়োজিত ছিলেন। সেখানে তারা কয়েকজন অবাঙ্গালী সৈনিককে হত্যা করে এখানে চলে আসে। শফিউল্লাহর দল ময়মনসিংহ পৌছার পর ক্যাপ্টেন নুরুল ইসলামের ইপিআর এর অংশ তাদের সাথে যোগ দেয়। তিনি শফিউল্লাহকে গত রাত্রে তাদের উপর আক্রমনের কাহিনী শুনান। পালটা আক্রমনে পাকিস্তানীদের মাত্র ৬ জন জীবিত ফেরত যেতে পেরেছে বলে তিনি শহিউল্লাহকে জানান। ব্যাটালিয়নের অফিসার এবং সৈনিকদের টাউন হলে একত্র করে বাংলাদেশের প্রতি তাঁদের আনুগত্য প্রকাশের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেজর কে এম শফিউল্লাহ। শফিউল্লাহ পরে পুলিশ ওয়ারলেসে বিভিন্ন জেলায় সশস্র যুদ্ধের আহবান পাঠান। ফিরতি বার্তায় তিনি আরও ১০ টি জেলা মহকুমা থেকে সাড়া পান। তিনি পুলিশ ওয়ারলেসে পাকিস্তানী বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন। সেখানে তিনি শুনেন ৮ বেঙ্গল এর সদর এর পতন হয়েছে। ঢাকা থেকে যশোরে বাহিনী স্থানান্তর হবে তাই তিনি এ স্থানান্তর বন্ধে ঢাকা আক্রমনের সিদ্ধান্ত নেন। এ লক্ষে ময়মন সিংহ রাজবাড়ীতে স্থানীয় নেতাদের সাথেও বৈঠক করেন। ময়মনসিংহে শফিউল্লাহ ভারতীয় সাহায্য চেয়ে ক্যাপ্টেন আজিজকে (একই দলিলে আরেক জায়গায় ক্যাপ্টেন মতির কথা লিখা এবং সাথে রফিক উদ্দিন আওয়ামী লীগ নেতা) হালুয়াঘাটের কাছে বিএসএফ ক্যাম্পে পাঠান। তিনি সেখানে যেয়ে লেঃ কঃ সিনহা(একই দলিলে আরেক জায়গায় কর্নেল রাঙ্গাজান কথা লিখা) এবং ক্যাপ্টেন বালজিতের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তারা সাহায্য এর প্রতিশ্রুতি দেন। পরে দলটি কিশোরগঞ্জে রওয়ানা হয়। যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ডাঃ আব্দুর রহমান এবং ডাঃ আহমদ আলী নামে দুজন ডাক্তারকে তাদের দলভুক্ত করেন। সেখানে মেজর মতিন তার দল নিয়ে তাদের সাথে একত্রিত হন। এদিন পাকিস্তান বিমান বাহিনী ভৈরবে বিমান আক্রমন চালায় এবং কিশোরগঞ্জের আকাশে চক্কর দেয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম তার ২ সহযোগীসহ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পৌছান এবং ইপিআর এর সহযোগিতায় বিএসএফ গাছুয়াবারি রেস্ট হাউজে পৌঁছে দেয়া হয়। সৈয়দ নজরুলকে কর্নেল রাঙ্গাজান অভ্যর্থনা জানান।