You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.29 | উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ  - সংগ্রামের নোটবুক

২৯ মার্চ ১৯৭১ঃ উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে বাহিনী পুনর্গঠন ও প্রতিরোধ যুদ্ধ

দিনাজপুর
দিনাজপুরে হামলার মুখে বিভিন্ন উইং সেক্টর থেকে ইপিআর সৈন্যরা পালিয়ে গেছে। আবার বি ও পি থেকে অবাঙালী সৈন্য পালিয়ে গেছে বা নিহত হয়েছে।
রংপুর
সৈয়দপুরে ৩ বেঙ্গলের সদর অংশের উপর পাক বাহিনী হামলা করে কমপক্ষে ৫০ জন বাঙ্গালী সৈনিক হত্যা করে। তাদের পরিবার সমুহ হামলা এবং যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট এবং রংপুর ক্যান্টনমেন্ট এর ভিতরের সকল বাঙ্গালী সৈন্যকে নিরস্র করা হয়েছে। সৈয়দপুরে এক বাঙ্গালী ক্যাপ্টেন এক পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন এবং তার স্ত্রীকে নিয়ে সৈয়দপুরে পালিয়ে যাওার সময় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পরে। জনতা তাদের হত্যা করে। বাঙ্গালী কেপ্তেন এর নাম নজির আহমদ এবং পাকিস্তানী ক্যাপ্টেন এর নাম নাবিদ আলম। তিস্তার উত্তরের অংশ ক্যাপ্টেন নওায়াজেশ এর ইপিআর বাহিনী এখনও নিয়ন্ত্রণ করছে।
বগুড়া
পাকবাহিনী কটন মিল ছেড়ে বৃন্দাবন পাড়া প্রাইমারী স্কুলে চলে যায়। পরে বাঙ্গালীরা কটন মিলের ছাদে এল এম জি বসান। দুপুরে পাকিস্তানী বাহিনী বাঙালিদের উপর আক্রমন করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত গলাগুলি চলে। একজন বাঙ্গালী পুলিশ আহত হয়।
নওগাঁ
নওগাঁতে ইপিআর ছাত্র সমন্বয়ে বাহিনী একটি পাকিস্তানী বহরের উপর আক্রমন চালায়। তারা উত্তর দিকে পালিয়ে যায়। তাদের তিনটা জিপ বিধ্বস্ত হয়। ২৩ জন নিহত হয়। তিনটা ওয়্যারলেস সেট দখল হয়।
রাজশাহী
২৫শে মার্চ রাত্রিতে রাজশাহী ক্যান্টমেন্ট থেকে পাবনা জেলা সদরে আগত ১ কোম্পানি প্রায় ১৫০ জন পাক সেনাকে ইপিআর স্থানীয়যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত বাহিনী ঘেরাও করে। কয়েক ঘণ্টা যুদ্ধের পর পাক বাহিনীর অস্র শেষ হয়ে আসলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পড়ে তারা পদব্রজে রাজশাহীতে রওয়ানা দেয়। পথে ইপি আর এর বাহিনীরা তাদের উপর ৩ ইঞ্চি মর্টার গোলাবর্ষণ শুরু করলে তাদের বেশীরভাগ নিহত হয়।
মেজর আসলাম এবং ক্যাপ্টেন রেজা পলায়ন কালে আটক হন এবং আড়ানী রেল ষ্টেশনের কাছে জনতার হাতে নিহত হয়।
পাবনা
বিমান বন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত পাক এয়ারফোর্সের ৯ সদস্যকে পাবনা জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় ১০ হাজার লোক ঘেরাও করে আত্মসমর্পনে বাধ্য করে। গ্রেফতারকৃতদেরকে ঈশ্বরদী থানায় এনে আটকে রাখা হলেও পরে অবস্থা বেগতিক দেখে আমিনুল ইসলাম চুনু ও নূরুজ্জামান বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা কয়েকদিন পর সেখান থেকে বের করে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে এবং লাশ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
ঠাকুরগাঁও
সকল বিওপিতে নিয়োজিত সকল অবাঙ্গালী ইপিআর সদস্যকে হত্যা করা হয়। সামান্য কয়েকজনকে বিওপিতে রেখে বাকীদের ঠাকুরগাঁও এনে জড়ো করা হয়।