You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাক অত্যাচারে পাবনার লােকেরা কুষ্টিয়ার দিকে রওনা হয়েছেন।
সুদেব রায়চৌধুরী

বাংলাদেশের ভিতর থেকে ॥ ১২ এপ্রিল পাকিস্তানী ফৌজের বােমাবর্ষণে পাবনা ধ্বংস্তুপে পরিণত। নিহতের সংখ্যা প্রায় হাজার।
হাসপাতাল, কলেজ পাওয়ার হাউস, রর আশ্রম কিছুই অক্ষত নেই। অতর্কিত আক্রমণে ভীত সন্ত্রস্ত্র মানুষ দলে দলে হারডিনজ (সারা) সেতু পার হয়ে কুষ্টিয়ার দিকে আসতে চেষ্টা করে। কিন্তু কোন যানবাহন না থাকায় জনগণের দুদর্শার একশেষ হয়।
শনিবার রাতের অন্ধকারে ঢাকা-পাবনা রুটে নগরবাড়ি ঘাটে প্রায় তিন হাজার দখলদারি ফৌজ নামে। মার্চ করে শহরে আসার সময় মেশিনগান থেকে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগােয়। এই হঠাৎ আক্রমণের জন্য মুক্তিফৌজ তৈরি ছিল না। তবুও তারা প্রাণপণ বাধা দেন।
পাঁচটি যুদ্ধ জাহাজে পাকফৌজ চট্টগ্রাম থেকে পদ্মা দিয়ে আরিচায় পৌঁছায়। ওই জাহাজেই তারা পাবনার নগরবাড়ি ঘাটে আসে।
এখানে মুক্তিফৌজ প্রথমে বাধা দেন। শহরে ঢােকার মুখে প্রবল লড়াই হয়। মরীয়া হয়ে দখলদার বাহিনী নির্বিচারে বােমা ফেলতে শুরু করে। মেশিনগান থেকে অবিরাম গুলি ছুড়ে রাস্তা পরিষ্কার করে দখলদার বাহিনী ইশ্বরদি বিমান বন্দরে দিকে এগােতে থাকে। সেখানে তিন হাজার মুক্তিফৌজ হাতিয়ার নিয়ে তৈয়ার।
ঢাকায় পলায়ন
অন্যদিক ঢাকার খবর জেলার অধিকাংশ পশ্চিম পাকিস্তানী ও অন্যান্য অবাঙালি অফিসার তাদের হেড কোয়াটার ছেড়ে এখন সপরিবারে ঢাকায় পালিয়ে এসেছেন। ঢাকায় এসে এই সব পশ্চিম পাকিস্তানী অফিসার বিভিন্ন জেলায় মুক্তিসেনাদের কাজকর্মের বিস্তারিত তথ্যাদি পাকফৌজের কাছে পাচার করতে শুরু করেছেন। এদের মধ্যে আবার কেউ কেউ মােটা টাকা পাবার আশায় বাঙালি সেজে মুক্তিফৌজের ভিতর ঢুকে ইয়াহিয়ার চর হিসাবে কাছ করছে। এছাড়া অন্তত পক্ষে এক হাজার পশ্চিম পাকিস্তানী অফিসার বিভিন্ন জেলায় মুক্তিফৌজের হাতে বন্দী আছেন।
জঙ্গীশাহী পাকফৌজের ‘তাবেদার’ মুষ্টিমেয় এই পশ্চিম পাকিস্তানী অফিসারদের দিয়ে এখন ঢাকা সেকরেটারিয়েটের দু একটি ফাইলের কাজকর্ম চালানাে হচ্ছে। পাকফৌজৈর সঙ্গে অসামরিক অফিসারদের যােগাযােগ রাখার উদ্দেশ্যেই সেকরেটারিয়েটের একটি অফিস ঘরে কোন মতে ভােলা রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।

সূত্র: আনন্দ বাজার : ১৩.৪.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!