ছাত্রদের এগার দফা ও ইতিহাসের অমােঘ নিয়ম
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রজু করার পর ১৯৬৮ সালের শেষের দিকে প্রায় একই সকল পাকিস্তানের উভয় খণ্ডে আইয়ুব বিরােধী আন্দোলন শুরু হয়ে যায় আপনা আপনি , আইয়ুবের প্লেবয় ভুটো অবশ্য ১৯৬৬ সালে আইয়ুবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বললাম, থেকে করাচি পর্যন্ত লং মার্চ করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন এবং রাতারাতি পাকিস্তান পিপলস পার্টি নামে এক রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ‘৬৮ সালে ভট্টো রীতিমত জননেতা’, কারাবন্দি শেখ মুজিবের ছয় দফার ঘাের বিরােধী হলেও আইয়ুব । খানের দমননীতির বিরুদ্ধে সােচ্চার। ছয় দফা বাঙালির মুক্তির সনদ এবং ছয় দফা । বানচাল করার জন্য আইয়ুব বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কৌশকে এই ছয় দফার প্রতিপক্ষ অন্যান্য ১৪ দফা, দশ দফা ইত্যাদি ফলাও করে প্রচারের হুকুম জারি করেন। বাংলার মানুষ ছয় দফা ছাড়া আর কিছুকে মূল্য দেয় নি। আওয়ামী লীগের শত শত নেতা কর্মীকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। দমন নীতি যতই বাড়তে থাকে শেখ মুজিব ও তার ছয় দফার প্রতি জন সমর্থনও বাড়তে থাকে। অবশেষে আইয়ুব বিরােধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংঘটিত হয়ে আন্দোলনের পথে নামল। এই সময় সকল রাজনৈতিক দলকে পেছনে ফেলে ছাত্ররা সংগ্রামী ভূমিকায় অবতীর্ণ হল। সকল ছাত্র সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রলীগের নেতা তােফায়েল আহমদ, আবদুর রাজ্জাক, চাত্র ইউনিয়নের সাইফুদ্দিন মানিক ও রাশেদ খান মেনন একত্রিত হয়ে ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর ব্যানারে ছয় দফার মর্মবাণী সম্বলিত ছাত্রদের এগার দফা জাতির সামনে তুলে ধরে। সর্বদলীয় ছাত্র সগ্রাম পরিষদের এগার দফার দাবি ছিল নিম্নরূপঃ ১.
ক, প্রাদেশিকীকরণকৃত কলেজগুলােকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিতে হবে। (এখানে উল্লেখ্য যে জগন্নাথ কলেজকে সরকারি করে ছাত্রদের আন্দোলকে মুদ্ধি করা হয়েছিল।) স্কুল ও কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রাদেশিকীকরণ কলেজগুলােতে নৈশ বিভাগ চালু করতে হবে। (এখানে উল্লেখ্য জগন্নাথ কলেজকে সরকারি করণের পর নৈশ বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।)। ছাত্রদের বেতন শতকরা ৫০% ভাগ হ্রাস করতে হবে। শিক্ষার মাধ্যম ও অফিস আদালতে বাংলা ভাষা প্রচলন করতে হবে।
চ, ছাত্রাবাস, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলােতে খরচের হার শতকরা ৫ ভাগ হ্রাস করতে হবে।
সূত্র : বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ বিজয় ও বঙ্গবন্ধুর জীবন উৎসর্গ – শামসুল আলম সাঈদ