You dont have javascript enabled! Please enable it! 1975.08.13 | বহুমুখী গ্রামীন সমবায়ের মাধ্যমেই বেকার সমস্যা দূর করা যায় | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

বহুমুখী গ্রামীন সমবায়ের মাধ্যমেই বেকার সমস্যা দূর করা যায়

দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনর্বাসন তথা শােষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে হলে ঔপনিবেশিক শাসন আমলের শােষণ যন্ত্রগুলিকে বাংলাদেশ হতে অপসারণ করতে হবে। গতকাল বাকশাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জেলা সম্পাদকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর দ্বিতীয় অধিবেশনের বহুমুখী গ্রামী সমবায়ের গুরুত্ব ও বাস্তবায়নের কর্মসূচী শীর্ষক প্রতিবেদন রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎ পানি সম্পদ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবত উপরােপক্ত বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বহুমুখী গ্রামীণ সমবায়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, গােটা বাংলাদেশই হল গ্রামে সমষ্টি। দেশের বস্ত্রের শতকরা ৫০ ভাগ প্রস্তুত করে গ্রামের তন্ত্রবায় সমিতির সদস্যরা। এ ছাড়া কৃষক, কামার, কুমার মৎসজীবি, তাঁতী এর সকলেই দেশের অর্থনীতিতে সর্বাপেক্ষা উৎপাদক শক্তি। অতএব গ্রামীন অর্থনীতিকে সৃদৃঢ় করতে হলে এই সকল উৎপাদক শক্তির মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে। এবং এই জন্যই বহুমুখী গ্রামীণ সমবায়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়ােজন। তিনি ১৯৭৫ সালের এক পরিসংখ্যানের উল্লেখ করেন জানান, দেশের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে মােট জনসংখ্যার শতকরা ৮৫ ভাগ কৃষিজীবির মধ্যে শতকরা ৫০ হতে ৬০ জনই বেকার। এরা বছরের সামান্য কয়েক মাস কর্মের সুযােগ লাভ করে। সেই অল্প সময়ের মধ্যেও তাদের কর্মের সুযােগ ভয়াবহ অনিশ্চিত। উপরন্তু মহাজন ও গ্রাম্য টাউটদের পাল্লায় পড়ে স্বল্পবিত্ত কৃষকেরাও দ্রুত গতিতে বেকারত্বের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশের ক্রমবর্ধমান এই বেকার সমস্যা একমাত্র বহুমুখী গ্রামীণ সমবায় সমিতির মাধ্যমেই দূর করা সম্ভব। জনাব সেরনিয়াবত আরও বলেন, বহুমূখী গ্রামীণ সমবায় কেবল দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাই নয় শ্রমের মর্যাদার মাধ্যমে জনগণের সমানসিকতাও পরিবর্তন সাধন করতে পারে।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩ আগস্ট ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত