বিআর-৩ ধানবীজ জনপ্রিয় করতে হবে: সামাদ
জয়দেবপুরস্থ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট অধিক ফলনশীল এবং রােগ প্রতিরােধে সক্ষম ধানের বীজ উদ্ভাবন করে বিশ্বের ধান গবেষণা ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। জয়দেবপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে আমাদের বিশেষজ্ঞগণ কর্তৃক উদ্ভাবিত ধান বীজ বিপ্লব বা বিআর-৩, গত বছর ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত বিশ্বের অধিক ফলনশীল ধানবীজ আন্তর্জাতিক প্রতিযােগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
আমাদের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রচলিত পরিবেশ ও আবহাওয়ার উদ্ভাবিত ধানবীজ বাংলাদেশের কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তােলার মাধ্যমে অধিক খাদ্য ফলাও অভিযান সফল করা সম্ভব। কতিপয় পশ্চিম আফ্রিকান দেশীয় কৃষি বিশেষজ্ঞ গবেষণা ইনস্টিটিউটে অধিক ফলনশীল ধানের চাষ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন দেশের ১৮৫ জন কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষানবীশ। এ বছর আরাে ২শ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পশ্চিম আফ্রিকা ধান উন্নয়ন সমিতি আরাে ২শ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখান থেকে দক্ষ কর্মীও তারা চেয়েছেন।
এ ব্যাপারে গবেষণা ইনস্টিটিউট শীঘ্রই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে। শনিবার কৃষিমন্ত্রী জনাব আবদুস সামাদ জয়দেবপুরস্থ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে আহূত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
গবেষণা ইনস্টিটিউটে উদ্ভাষিত বিপ্লব বা বিআর-৩-এর গুণাগুণ সম্পর্কে জানান হয় যে ১৯৬৯ সালে আইআর-৫০৬ এর সঙ্গে ৫টি শাইলের মত্তকরীকরণ করে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও বাছাই এবং নির্বাচন করে ১৯৭৩ সালে এই সম্পূর্ণ নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করা হয়।
বিপ্লব আমাদের দেশে তিন মওসুমেই যেমন বােরাে, আউশ এবং শাইল ফসল করা সম্ভব। বােরাে মওসুমে একর প্রতি শুকনা ধানের ফলন হয় ৮০ থেকে ৯০ মন, আউশ ৬০ থেকে ৭০ মন ও শাইল ৭০ থেকে ৮০ মন। আইআর-৮ অপেক্ষা এটা অনেক উন্নত। বিপ্লবের ধান বা চাউলে কোন প্রকার দাগ থাকে না।
উদ্ভাবিত অন্যান্য ধান হচ্ছে ব্রি-শাইল বা বি-আর-৪। এটা গবেষণা কেন্দ্রের নবতর অবদান। রােপা আমন মওসুমে এটা চাষের জন্য অনুমােদিত।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ১৩ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত