খুলনা ও যশােরের চটকলে প্রয়ােজনীয় বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না
গােয়ালপাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র খুলনা ও যশাের এলাকার চটকলসমুহে প্রয়ােজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহে অপারগ হয়েছে। ফলে গত ৪৮ দিনে বাংলাদেশ প্রায় ৪ কোটি টাকার অধিক পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশ পাটশিল্প সংস্থার জনৈক মুখপত্রের নিকট হতে একথা জানা গেছে। খুলনাও যশাের এলাকার কলকারখানা ও গৃহস্থলীর প্রয়ােজনীয় বিদ্যুতের উৎস ৬০ মেগাওয়েট ক্ষমতাসম্পন্ন গােয়ালপাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গত ২১শে মে হতে বিকল হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০ মেগাওয়াট ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গােয়ালপাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরাতন ইউনিটটি পুনরায় চালু করা হয়। বর্তমানে পুরাতন ইউনিট হতেই এলাকার ১৭টি চটকলে সীমিত পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে এসব চটকলকে তাদের উৎপাদন সময় হ্রাস করতে হয়েছে। ফলে উৎপাদনও হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ চটকল সংস্থার হিসাব মতে গত ২১শে মে থেকে ৭ই জুলাই পর্যন্ত সময়কালে যে পরিমাণ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে তাতে ৪ কোটি টাকারও বেশী বৈদেশিক মুদ্রা আয় ক্ষতি হয়েছে।
তবে কি নাগাদ ৬০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি চালু সম্ভব হবে সে সম্পর্কে কোনই নিশ্চয়তা নেই। ৮ই জুলাই থেকে ১৭টি চটকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যবস্থার চটকলগুলি সপ্তাহে ৬ দিন চলবে। পর্যায়ক্রমে প্রতি চটকল প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে। | ৬০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি পুনরায় চাল করার জন্য বিশেজ্ঞরা কঠোর পরিশ্রম করছেন। যান্ত্রিক গােলযােগের জন্য ৬০ মেগাওয়াট ইউনিটের বন্ধ হয়ে যাওয়া এটাই প্রথম নয়। এভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে শুধুমাত্র চটকল নয়, নিউজ প্রিন্ট মিল, বস্ত্রমিল ও অন্যান্য শিল্পকারখানাও খুবই অসুবিধায় সম্মুখীন হচ্ছে। তাই স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পকারখানার সাথে সংশ্লিষ্ট মহল ৬০ মেগাওয়ট ইউনিটের অপারগতা পূরণে পুরাতন ইউনিটটি জোরদার করাও সুপারিশ করেছে।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ১০ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত