You dont have javascript enabled! Please enable it!

জাতীয় দলের অন্যতম সেক্রেটারী শেখ মনি বলেন: সদ্য স্বাধীন বাংগালী জাতিকে বিদেশী মতাদর্শের ‘ডিবেটিং ক্লাবে পরিণত হইতে দেওয়া যায় না

বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মনি গতকাল (রবিবার) বলেন যে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অন্তর্ঘাতের সকল প্রবণতা নির্মূল করা এবং জনগণের সকল অংশের মধ্যে সংহতি ও এক্য সাধনের উদ্দেশ্যে সমাজ বিকাশের রূপরেখা প্রদর্শন করিয়া দলের গঠনতন্ত্র এক নূতন ও অনন্য রাজনৈতিক ভাবনা উপস্থাপন করিয়াছে।
ঐতিহাসিক ৭ই জুন উপলক্ষে ঘােষিত জাতীয় দলের গঠনতন্ত্র ও কাঠামাে সম্পর্কে তাঁহার মন্তব্য চাওয়া হইলে শেখ মনি বাসসকে বলেন, দলের গঠনতন্ত্রটিকে চতুর্থ সংবিধানের পরবর্তী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের সহিত মিলাইয়া পাঠ ও বিবেচনা করিতে হইবে।
তিনি বলেন, এই দুইটি সংবিধান ও গঠনতন্ত্র যুগপৎ ও যুগ্মভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক সূচিত দ্বিতীয় বিপ্লবের অধীনে গঠিতব্য প্রস্তাবিত সমাজের সামগ্রিক ধারণা উপস্থাপন করে।
শেখ মনি বলেন যে, নূতন ব্যবস্থাধীনে জাতীয় দল গণ সংগঠনের প্রতিষ্ঠানসমুহের এবং সাড়ে ৭ কোটি বাঙ্গালীর অবিভাজ্য আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করিতেছে।
তিনি বলেন যে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংহতি এবং শােষণমুক্ত এবং সমঞ্জস্যপূর্ণ একটি শান্তি ও সমৃদ্ধিপূর্ণ সমাজ গঠনের মাধ্যমে সামাজিক প্রগতির লক্ষ্যে যেন অগ্রসর হওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে জাতিকে পুনর্গঠনের অঙ্গীকার সংবিধানে ঘােষণা করা হইয়াছে।
শেখ মনি বলেন যে, রাষ্ট্রীয় সংবিধান ও জাতীয় দলের গঠনতন্ত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একক ও বৈপ্লবিক নেতৃত্বাধীনে আমাদের মহান জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ভিত্তি স্থাপন করিয়াছে, এই প্রয়াস গীত ও সঙ্গীতের মাধ্যমে আমাদের পূর্বপুরুষদের লালিত স্বপ্ন সােনার বাংলা বাস্তবায়নের প্রয়াস। | তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সংবিধান দিয়াছে সরকারের কাঠামাে। জাতির জনক কর্তৃক উপস্থাপিত জাতীয় দলের গঠনতন্ত্র আমাদের মহান জনগণের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বৈষয়িক কল্যাণের নিশ্চয়তা প্রদান করিয়াছে।
শেখ মনি বলেন যে, অতীতে (পশ্চিম) পাকিস্তানের এবং অন্যান্য বিদেশী দেশের ঔপনিবেশিক শাসকরা ‘বিভেদ করাে এবং শাসন করাে।’ এই ভিনদেশী ও ঔপনিবেশিক নীতি জবরদস্তি বাস্তবায়ন করিয়া আমাদিগকে শােষণ ও শাসন করিয়াছে। তিনি বলেন, ইহার ফলে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের ঐতিহাসিক, সমৃদ্ধ ও উর্বরা ভূখণ্ড দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অশিক্ষা, জরা ও মৃত্যুর ভূমিতে পরিণত হইয়াছে।
তিনি বলেন যে, নূতন সংবিধান যে কোন বিভেদবাদী পদ্ধতির বিরুদ্ধে এক নিশ্চয়তা প্রদান করিয়াছে এবং আমরা আমাদের জনগণের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বৈষয়িক কল্যাণ সাধনে আমাদের প্রাগতিক প্রয়াসে নিজদিগকে বিভক্ত করিতে রাজী নহি’।

সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৮ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!