You dont have javascript enabled! Please enable it!

সকল কাউন্টের সূতার উপর হইতে নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহৃত হইবে— শিল্পমন্ত্রী

কুড়ি ও ইহার নিম্ন কাউন্টের সূতার উপর হইতে নিয়ন্ত্রণ আগামী একমাসের মধ্যে এবং ষাট ও ইহার উচ্চ কাউন্টের সুতার উপর হইতে নিয়ন্ত্রণ আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাহৃত হইয়া যাইবে।
গতকাল (সােমবার) ঢাকা হইতে ১৬ মাইল দূরে সাভারে বস্ত্রমিল সংস্থার ৪৮তম মিল আফসার টেক্সটাইল মিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে শিল্পমন্ত্রী জনাব এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামন উপরােক্ত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান যে, বস্ত্রশিল্পের বৃহত্তর স্বার্থে সূতার অবাধ বাণিজ্য শুরু করা হইবে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, অবাধ বাণিজ্য অর্থনীতির পথকে সুগম করিয়া তােলে। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেখানে যত বেশী নিয়ন্ত্রণ, যত বেশী জটিলতা, সেখানেই দুর্নীতির সুযােগ তত বেশী থাকে।
জনাব কামরুজ্জামান বলেন, অদূরভবিষ্যতে দেশ বস্ত্রশিল্পে স্বনির্ভতা অর্জন করিবে। তবে এ স্বনির্ভরতার জন্য কলে কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে নিরলসভাবে পরিশ্রম করিতে হইবে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের কল-কারখানাসমূহের উৎপাদন শতকরা একশত ভাগে উন্নীত করিতে হইবে। এমনকি কোন কল কারখানায় যদি উৎপাদন ক্ষমতায় শতকরা ৯৫ ভাগ। পণ্যও উৎপাদিত হয় তাহা হইলেও ইহা উক্ত কল কারখানার পরিচালকদের অযােগ্যতা বলিয়া বিবেচিত হইবে।
তিনি হুঁশিয়ার করিয়া দিয়া বলেন, ইহার পর কোন মিল কর্মকর্তাকে যদি কারখানায় অনুপস্থিত দেখা যায়, তবে বিনা নােটিসে কর্তব্যে অবহেলার দায়ে তাঁহাকে বরখাস্ত করা হইবে।
জনাব কামরুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের অভুক্ত রাখিয়া উৎপাদন বুদ্ধি আশা করা যায় না। সরকার শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় যথেষ্ট সজাগ আছেন। তবে শ্রমিকদেরও কাজে ফাঁকি দিলে এবং কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতি থাকিলে চলিবে না।
জনাব কামরুজ্জামান বলেন। এখন আমাদের সামনে একটাই প্রতি প্রশ্নবাচার প্রশ্ন। সেই বাচার প্রশ্ন অর্থহীন হইয় পড়িবে যদি সমষ্টির স্বার্থ উপেক্ষা করিয়া ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষায় মনােনিবেশ করা হয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ন রাখিয়া বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারে প্রতিযােগিতায় মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব অস্তিত্বকে টিকাইয়া রাখিতে হইবে। | অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বস্ত্রশিল্প সংস্থার চেয়ারম্যান জনাব এম. কে. আনােয়ার, বস্ত্রশিল্প শ্রমিক লীগের সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী মােজাম্মেল হক এম. পি. বস্ত্রশিল্প শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক লীগৈর। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জনাব মাহবুবুর আলম, সাভার এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব আনােয়ার জং এবং আফসার কটন মিলের জেনারেল ম্যানেজার জনাব নজরুল ইসলাম।
আড়াই কোটি টাকার পরিকল্পনায় ১৯৬৯ সালে উক্ত মিলটির নির্মাণ কাজ ব্যক্তিগত মালিকানায় শুরু হয়। দেশ মুক্ত হওয়ার পর সরকারের জাতীয়করণ নীতিতে উক্ত মিলটির মালিকানাও বস্ত্রশিল্প সংস্থার উপর অর্পিত হয়। সাড়ে ১২ হাজার টাকুবিশিষ্ট উক্ত মিলটি প্রতিদিন পাঁচ হাজার পাউন্ড সূতা উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে। অত্যন্ত আধুনিক যন্ত্রপাতিতে মিলটি সজ্জিত করা হইয়াছে। উদ্বোধনের পর শিল্পমন্ত্রী মিলটির অত্যন্তর ভাগ ঘুরিয়া ফিরিয়া দেখেন।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ জুন ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!