You dont have javascript enabled! Please enable it!

বুড়িগঙ্গার পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে
পুরানাে ঢাকায় পানি সরবরাহ ব্যহত হওয়ার আশংকা

বুড়িগঙ্গার পানিতে রােগ জীবাণু বৃদ্ধি পেতে থাকায় শতাব্দী প্রাচীন চাঁদনিঘাট ওয়াটার ওয়ার্কস পুরনাে ঢাকায় পানি সরবরাহ করে আসছে। কিন্তু ওয়াটার পলিউশন কন্ট্রোল বাের্ড (ডব্লুপিসিবি) সম্প্রতি পরীক্ষা করে দেখেছে, নদীর মেস্থান থেকে (ইনটেক পয়েন্ট) পানি উঠানাে হয় সেখানে প্রচুর কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া জমে গেছে। এই জীবাণু থেকে কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয় ও পানিবাহিত অন্যান্য রােগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দূষিত জীবাণু নষ্ট করার জন্যে ৪০ লাখ গ্যালন পানিতে ওয়াটার ওয়ার্কস অধিক পরিমাণে ব্লিচিং পাউডার ও এলুমিনিয়াম আলফেট ব্যবহার করতে বাধ্য হয়।
ওয়াসা সূত্র থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পানি বিশুদ্ধ করার জন্য চলতি আর্থিক বছরের গত ১১ মাসে ৭৫ দিন ডিপলুট্যান্ট ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৭০ সালে ব্যবহৃত হয় ৫০ টন।
ডব্লু পি সি বির’ পরীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি ১শ’ মিলিলিটার পানিতে ২০ সহস্রাধিক কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এই হার স্বাভাবিক মাত্রার চাইতে বেশী।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, পানিতে অক্সিজেন ও এমােনিয়া হ্রাস পাচ্ছে। অক্সিজেন আছে ৭ থেকে ৮ পিপিএম। এমােনিয়া রয়েছে ৬ দশমিক ৯ পিপিএম। ডব্লুপিসিবি সূত্রে প্রকাশ, এমােনিয়া ও অক্সিজেনের নিম্নহার জলজ প্রাণীর জন্যে মারাত্মক।
এনার সংবাদদাতা ইনটেক পয়েন্টে গিয়ে দেখেছেন, সিরিশ তৈরীর জন্যে সালফারিক এডিসযুক্ত কাঁচা চামড়া পানিতে ডােবানাে রয়েছে। ইনটেক পয়েন্টের পশ্চিম দিকের চরে ৬টি সিরিশ তৈরীর কারখানা আছে। পয়েন্টের কয়েক ফুট দূরে ক্রমবর্ধমান বস্তী। বস্তীর বেশ কিছু কাঁচা পায়খানা ও নর্দমার মল ও জঞ্জাল পানিতে এসে পড়ছে। কিন্তু ১৯৭৪ সালের ওয়াটার পলিউশন কন্ট্রোল আইন অনুযায়ী ইনটেক পয়েন্টের ৫ হাজার গজের মধ্যে কোন প্রকার দূষিত। পদার্থ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ডব্লু পিসিবি সূত্র ইনটেক পয়েন্টের চতুর্পার্শ্বে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া জমে থাকার জন্যে সিরিশ কারখানা, নর্দমার মল ও বস্তী এলাকার উপস্থিতিকেই প্রধানত: দায়ী করেছেন। তাঁরা আশংকা করেন, উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে ক্রমাগত দূষিতকরণ এমন পর্যায়ে যাবে যার ফলে বুড়িগঙ্গা নদী দূষিত পদার্থ ধারণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। তারা বলেন দূষিত জীবাণু দূরীকরণের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ওয়াটার ওয়ার্কসের হারও বৃদ্ধি পাবে। অধিক পরিমাণে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহারের দরুন পাইপ লাইনও বেশীদিন টিকবে না।

সূত্র: বাংলার বাণী, ২৯ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!