৯৫ কোটি টাকার ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমােদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ বিভিন্ন খাতে প্রায় ১৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমােদন করেছে।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী জনাব মনসুর আলী, মন্ত্রী পরিষদের কয়েকজন সদস্য ও কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ গতকাল যে, ১৭টি প্রকল্প অনুমােদন করেছে, সেগুলাে হচ্ছে –
বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন প্রকল্প। মাঝারী ও লম্বা কোষ বিশিষ্ট তুলা চাষাবাদের সূচনা, অনাবাদী ও অল্প ফসল বিশিষ্ট জমিগুলােতে তুলা চাষ ও বিদেশ থেকে তুলা আমদানী না করে বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচানাের জন্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ১১ লাখ ৭২ হাজার টাকার বৈদেশিক মুদ্রাসহ ১ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
কারিগরী ছাত্রদের মেধা বৃত্তি প্রকল্প
এই প্রকল্পের অধীনে কারিগরী ছাত্রদের মেধা বৃত্তি প্রদানের জন্যে ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয় হবে। টাকা খরচ হবে।
অডিও ডিস্যুয়াল ভ্যান প্রকল্প
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কাজের জন্য অডিও ডিস্যুয়াল ভ্যান ব্যবহার করার জন্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৮২ লাখ ৬ হাজার টাকা খরচ হবে।
বারপাল সলিমপুর কালাবালুখালী প্রকল্প
যশাের জেলার কালিয়া ও খুলনা জেলার তেরখাদা থানার ৪৪ হাজার ৮শ’ একর জমির বিস্তীর্ণ এলাকাকে লবণাক্ততার কবল থেকে মুক্ত করে রেগুলেটরের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এই প্রকল্পের লক্ষ্য। এতে ৯৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা খরচ হবে।
মেঘনা ঘােনাগােদা প্রকল্প
বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে কষি উন্নয়ন বৃদ্ধির জন্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৬ কোটি ৩২ লাখ ১৪ হাজার টাকা খরচ হবে।
সংশােধিত মধুনদী প্রকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের ব্যবস্থা করার জন্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৯ কোটি ১ লাখ ১১ হাজার টাকা খরচ হবে।
কুষ্টিয়া শহর সংরক্ষণ
প্রকল্প গড়াই নদীর ভাঙ্গন রােধ করে কুষ্টিয়া শহরকে রক্ষা করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এতে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচ হবে।
প্রি-টেস্টেড কংক্রিট গােল উৎপাদন কারখানা
এই কারখানা নির্মাণে ৯ কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা খরচ হবে।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আরও উন্নয়ন প্রকল্প
এই প্রকল্পের অধীনে ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে যে আইনীভাবে দখল করা জমি পুনর্দখল, কিছু গারাে পরিবারকে পুনর্বাসন, বন সৃষ্টি, রাস্তা নির্মাণ, শিশুদের চড়ুই ভাতির জন্যে সুব্যবস্থা করা হবে।
বন গবেষণাগারের আরও উন্নয়ন
চট্টগ্রামে অবস্থিত বন গবেষণাগারের আরও উন্নয়ন করার জন্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৩ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
বন সৃষ্টি, জরীপ ও সংরক্ষণ প্রকল্প
পার্বত্য চট্টগ্রামের অশ্রেণীভুক্ত ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বন সৃষ্টি ও ৫ লাখ একর জমি জরীপ, সীমা নির্ধারণ ও সংরক্ষণ করার জন্যে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৭১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭৩-৭৮)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বৃদ্ধির ফলে শিক্ষা ও আনুষাঙ্গিক সুবিধা বৃদ্ধি, ছাত্রাবাস, শিক্ষক ও অন্যান্যদের বাসস্থান নির্ধারণের জন্য এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৬ কোটি টাকা খরচ হবে।
রােকনপুর-জিন্দাবাদ রেল লাইন স্থাপন
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য ও উন্নতির জন্যে হার্ডিঞ্জ সেতুর বিকল্প সংযােগ হিসাবে এই রেলপথ পুনঃস্থাপন ও মিটার গেজ থেকে ব্রড গেজে পরিবর্তন করার জন্যে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ৩৩ লাখ ১২ হাজার টাকা খরচ হবে।
ব্রাঞ্চ উন্নয়ন ও বীজ বাগান স্থাপন
পার্বত্য চট্টগ্রামে ৮টি এবং সুন্দরবনে ২টি বৃক্ষ উন্নয়ন ও বীজ বাগান স্থাপনের জন্যে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে ৩ হাজার ৭ একর জমিতে ফলের গাছসহ ৪৫ ধরনের গাছের চারা জন্মানাে হবে। এতে খরচ হবে ৭০ লাখ টাকা।
পৌর-এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের প্যাকেজ প্রকল্প
আগামী দুই বছর ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া দেশের অন্যান্য পৌর এলাকার প্রয়ােজনীয় ৩৩ কিলাে ভােল্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মাণ করার জন্যে এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এতে ৫১ কোটি ৮১ লাখ টাকা খরচ হবে।
সেচ প্রকল্পসমূহে বিদ্যুৎ সরবরাহ
১৯৬টি গভীর নলকূপ ও ২ হাজার ১৪৪ …টি লাে লিফট প্রকল্প
বৈদ্যুতিকরণের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা খরচ হবে। এই প্রকল্পের অধীনে টাকায় ২০ টি নলকূপ ও ১২১টি পাম্প, যশােরে ৫২টি নলকূপ, ও ৩১৬টি পাম্প, কুমিল্লায় ১২৪টি নলকূপ ও ১৯৮টি পাম্প, রংপুরে ৯১০টি পাম্প, রাজশাহীতে ৩২১টি পাম্প, পাবনায় ২২৭টি পাম্প বগুড়ায় ৪১০টি পাম্প, চট্টগ্রামে ৫২৪টি পাম্প এবং বরিশালে ১০০টি পাম্প বৈদ্যুতিকরণ করা হবে।
সূত্র: বাংলার বাণী, ৩০ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত