You dont have javascript enabled! Please enable it!

ঢাকা-দিনাজপুর কোচ যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানাের আহ্বান

দিনাজপুর ও ঢাকার মধ্যে যাতায়াতকারী বি.আর.টি.সি. যাত্রীদেরকে দুর্ভোগের সীমা নেই বলে অভিযােগ পাওয়া গেছে।
দিনাজপুর, সৈয়দপুর ও রংপুরের যাত্রীদের জন্য মাত্র দুটি কোচ চালু রয়েছে। বি.আর.টি.সি’র সম্ভবত সব চাইতে খারাপ দুটি কোচই এই দীর্ঘ পথে চলাচল করছে। পথিমধ্যে ইঞ্জিন ডাউন, যন্ত্রাংশ খুলে পড়া, টায়ার বাস্ট প্রভৃতি নিত্যদিনের ব্যাপার। ঢাকা হতে দিনাজপুর হচ্ছে ১০ ঘণ্টার পথ যা অতিক্রম করতে এসব কোচের ২০ হতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে যাত্রী সাধারণকে পথিমধ্যে অর্ধাহার অনাহারে দুর্ভোগের মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করতে হয়।
ঢাকা হতে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকা কোচের মাধ্যমে মফস্বল শহরসমূহে প্রেরণ করা হয়। ঢাকা থেকে এইসব প্যাকেট কোচের ছাদে তুলে দেওয়া হয়। পথিমধ্যে কোচের ড্রাইভার বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল উঠানামা করে। ফলে পত্রিকার প্যাকেটও উপর হতে নীচে আবার নীচে হতে উপরে স্থানান্তর হয়। ফলে নির্দিষ্ট স্থানে পৌছে পত্রিকার বহু প্যাকেট খুঁজে পাওয়া যায়
বলে অভিযােগ করেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় বি.আর.টি.সি, এজেন্টের নিকট বহু অভিযােগ করেও কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। অপরপক্ষে এসব পত্রিকার পাঠক নষ্ট হচ্ছে এবং পত্রিকা এজেন্টদেরকে লােকসান দিতে হচ্ছে।
দিনাজপুরের কোচ স্টেশনটি প্রকৃতপক্ষে একটি প্যাট্রোল পাম্প। যেখানে পাম্পের একটি ছােট্ট অফিস ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। ফলে যাত্রীদেরকে রােদ-বৃষ্টি-ঝড়ে খােলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে কোচের জন্য অপেক্ষা এবং উঠা-নামা করতে হয়। এমনকি মহিলা যাত্রীদের জন্যও বসার কোনাে ব্যবস্থা নেই।
তাছাড়া এই সুদীর্ঘ পথে যাত্রীদের পায়খানা-প্রস্রাব এবং খাদ্য গ্রহণের কোনাে সুবিধা নেই। এতে বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। এ জন্য বগুড়া এবং ময়মনসিংহে। দুটি বিশ্রামাগার অত্যাবশ্যক। এবিষয়েও কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন। কোচের মাধ্যমে যাতায়াতের জন্য অন্তত: ৫দিন আগে টিকিট করতে হয়। ফলে জরুরী প্রয়ােজনে কোচে যাতায়াত সম্ভব হয় না। তাছাড়া দিনাজপুর এবং ঢাকার কোচ ছাড়ে ভাের সাড়ে পাঁচটায়। অত সকালে গাড়ী ধরা অনেকের পক্ষে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের পক্ষে অসম্ভব। তাই দিনে অন্তত দুটো কোচ প্রয়ােজন। একটা সকাল ৬টার অপরটা সকাল ১০টায়। এ নিয়েও বহু আবেদন নিবেদন ব্যর্থ হয়েছে।
অত্রাঞ্চলের জনগণের পক্ষ হতে উপরােক্ত বিষয়সমূহের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বি.আর.টি.সি. কর্মকর্তাদের শুভ দৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।

সূত্র: বাংলার বাণী, ২০ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!