You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.23 | পাকিস্তান দিবসে ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবন ও সেনাবাহিনীর সদর দফতর ছাড়া বাংলাদেশে আর কোথাও পাকিস্তানের পতাকা ওড়েনি - সংগ্রামের নোটবুক

২৩ মার্চ ১৯৭১ঃ অসহযোগ আন্দোলনের ২২তম দিবসে

অসহযোগ আন্দোলনের ২২তম দিবসে মুক্তি পাগল মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা হাতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে এগিয়ে যায়। পাকিস্তান দিবসে ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবন ও সেনাবাহিনীর সদর দফতর ছাড়া বাংলাদেশে আর কোথাও পাকিস্তানের পতাকা ওড়েনি। যানবাহন বিপণী বিতান সকল সরকারী বেসরকারি ভবনে ক্ষুদ্রাকৃতি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
যেখানে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পতাকা ওড়ায়নি সেখানে ছাত্রলীগের কর্মীরা পতাকা উত্তোলনের কাজ করে।  শেখ মুজিবুর রহমান আজকের দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব দিবস’ হিসেবে পালন করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং সে অনুযায়ী আজ তিনি সারা বাংলায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলার সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাধা দিলে ছাত্র-জনতা তা উপেক্ষা করে পতাকা তোলেন। গাজীপুরের অস্র কারখানায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। কারখানার প্রধান ব্রিগেডিয়ার করিমুল্লাহ কারখানার বাহিরে সম্ভবত ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট অবস্থান করছেন।  স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ আজ ‘প্রতিরোধ দিবস’ পালণ করে। সকালে প্রভাত ফেরী যোগে শহীদদের মাজারে গমন ও পুষ্প মাল্য অর্পণ করে। তারা সার্জেন্ট জহুরুল হকের মাজার ও তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন সকালে করেন। মাজার জিয়ারত সেশে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে পল্টন ময়দানে জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ এবং ১১ টায় বায়তুল মোকাররমে জনসভা করে।  রাজপথে লাঠি-বর্শা-বন্দুকের মাথায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে সারাদিন রাজধানী প্রকম্পিত করে। জনতা ভুট্টো ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। জনতা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে ‘মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছবি এবং জুলফিকার আলী ভুট্টো ও জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
যশোর মহকুমার ১০০০ সদস্য বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। ঝিনাইদহের কোট চাঁদপুরে ৪০০০ সদস্য বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।  ছাত্র ইউনিয়ন শহীদ মিনারে সমাবেশ করে।  বিক্ষুব্দ শিল্পি সমাজ সন্ধ্যায় বাহাদুর শাহ পার্কে সমাবেশ করে।
ছাত্র ইউনিয়ন এবং ন্যাপ এক বিবৃতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানিয়েছেন।